শিক্ষক: নিঃশব্দ বিপ্লবের স্থপতি
তাঁরা সবার আগেই আসেন, সবার পরে বের হন। তাঁরা পড়ান কেবল বই নয়—জীবনও। তাঁরা কেবল ক্লাস নেন না—নেন দায়িত্ব।
শিক্ষক শব্দটি যেন এক পর্বতের নাম, যার উপর দাঁড়িয়ে উঠে আসে জাতি, সভ্যতা, ভবিষ্যৎ।
একজন প্রকৃত শিক্ষক কোনোদিন কেবল চাকরি করেন না। তিনি মানুষ গড়েন—চুপচাপ, বিনিময়হীন, তবুও এক অসীম তৃপ্তি নিয়ে। তাঁর কাছে প্রতিটি শিক্ষার্থী কাঁচা মাটি, যাকে তিনি গড়ে তোলেন নিখুঁত হাতে। নিজে হয়তো আলোয় আসেন না, কিন্তু আলো তৈরির নেপথ্য কারিগর হয়ে থাকেন আজীবন।
আমাদের সমাজে শিক্ষকের সম্মান নিয়ে অনেক কথা বলা হয়, কিন্তু বাস্তব চিত্রটা কি তাই? শিক্ষকরা বছরের পর বছর ঠিকে থাকার চেষ্টা করেন নামমাত্র বেতনে, নেই তেমন কোন সুবিধা। যারা প্রজন্ম তৈরি করেন, তাঁদেরই জীবন অনিশ্চয়তায় ঠেকে থাকে! অথচ উন্নত জাতি গঠনের মূল চাবিকাঠিই তাঁদের হাতে।
তবুও একজন শিক্ষক ক্লাসে ঢোকার সময় সব কিছু ভুলে যান। তিনি সেই একই হাসিমুখে শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ান, ভুল শুধরে দেন, উৎসাহ দেন। কারণ তিনি জানেন—এই সন্তানটাই একদিন গড়বে দেশ, সমাজ, ভবিষ্যৎ।
শিক্ষকতা পেশা নয়, এক সাধনা। এক শিক্ষক হয়তো হাজার শিক্ষার্থীকে তৈরি করেন, কিন্তু তাঁর নামটাও কোথাও লেখা থাকে না। তবু তিনি বলেন, “তুমি পারবে”—এটাই তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান।
আজ এই দ্রুত পাল্টে যাওয়া সময়ে, প্রযুক্তির দুনিয়ায়, শিক্ষককে নিয়ে ভাবার সময় এসেছে নতুন করে। তাঁর সম্মান, নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা না করলে গড়ে উঠবে না আগামীর প্রজন্ম।
শ্রদ্ধা সকল শিক্ষককে—যাঁরা নীরবে, নিঃস্বার্থে, আলোর পথ দেখিয়ে চলেছেন আমাদের। জাতির হৃদয়ে তাঁদের স্থান চিরন্তন!
মো: তানজিম হোসাইন
শিক্ষক