আবু রাসেল সুমন
জেলা প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে বাবলু ত্রিপুরা নামে ৫ম শ্রেণী পড়ুয়া
এক শিক্ষার্থীকে স্কুলে বুটজুতো পড়ে না যাওয়ার অপরাধে প্রচন্ড প্রহার করায় নিচের চোয়ালের দাঁত ভেঙ্গে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক
ক্যাটালিনা চাকমার বিরুদ্ধে।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গাছবান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়,২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুর বেলায় গাছবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন সময়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া বাবলু ত্রিপুরা নামে এক শিক্ষার্থীকে তাঁর পায়ে বুটজুতা না থাকায় প্রধান শিক্ষক ক্যাটালিনা চাকমা পিটিয়ে দাঁত ভেঙ্গে দেয়। পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানি হলে ২৮ এপ্রিল অভিভাবকবৃন্দ ও পুরো গাছবান এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক ক্যাটালিনা চাকমাকে স্কুলে অবরুদ্ধ করে তাঁর শাস্তি দাবি করেন এবং ক্যাটালিনা চাকমার দ্রুত অপসারণের দাবী তুলেন।
আহত বাবলু ত্রিপুরা জানায়, বৃহস্পতিবার ক্লাসে
বুট জুতা পড়ে না আসায় প্রধান শিক্ষক ক্যাটালিনা চাকমা তাকে বই দিয়ে বেধড়ক পিটান। এক পর্যায়ে বইয়ের শক্ত অংশের আঘাতে নিচের পাটির একটি দাঁত ভেঙ্গে যায়।
পার্বত্য জেলা পরিষদ খাগড়াছড়ি চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের পক্ষে মেনুকা ত্রিপুরা। লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, গত ২৪ শে এপ্রিল ২০২৫ইং তারিখ রোজ বৃহস্প্রতিবার স্কুল চলাকালীন সময়ে পায়ে জুতা না থাকায় বাবলু ত্রিপুরাকে তাঁর প্রধান শিক্ষক ক্যাটালিনা চাকমা পিটিয়ে দাঁত ভেঙ্গে দেয়।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বর্তমানে বাবলু ত্রিপুরা শারীরিক নির্যাতনের জন্য অসুস্থতা ভোগছে। তাই এই ঘটনার সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক ক্যাটালিনা চাকমার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবী জানান।
এ বিষয়ে গাছবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জানতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক ক্যাটালিনা চাকমাকে স্কুলে পাওয়া যায়নি। পরে, মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টায় তিনি জানান, এখন স্কুলের বাহিরে আছেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি কথা বলতে পারবেন না। তিনি অন্যত্র স্কুলে বদলির জন্য তদবির করছেন।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সমাবেশ চাকমা বলেন, গাছবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেনী পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে মেরে
দাঁত ভেঙ্গে ফেলার ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। এবিষয়ে ২৮ এপ্রিল স্কুলের এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা জানতে পেরে আমি স্কুলে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করি। যেহেতু শিক্ষার্থীদের শারীরিক বা মানসিক আঘাত করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ তাই বিষয়টি সম্পর্কে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশের অপেক্ষায় আছি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি, তবে অভিভাবকবৃন্দ খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা
ত্রিপুরা বলেন, এবিষয় আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত টিমগঠন করা হয়েছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।