মোঃ আহসান হাবীব সুমন,নিজেস্ব প্রতিবেদক:
জামালপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত সন্ধ্যাঃ ০৭:০০ ঘটিকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু মিলনায়তনে, জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর ১৬৪ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর জেলার, জেলা প্রশাসক জনাব হাসিনা বেগম এবং জামালপুর জেলা পুলিশ সুপার জনাব সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম-সেবা, জামালপুর।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জামালপুর পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসক বিশ্বকবির জীবন বৃত্তান্তের স্মৃতিচারণ করেন। ২৫ বৈশাখ কেবল একটি জন্মবার্ষিকী নয়, এটি এক সাংস্কৃতিক অনুপ্রেরণার উৎসব। এই দিনে দেশের নানা প্রান্তে অনুষ্ঠিত হয়-রবীন্দ্রসংগীত, কবিতা আবৃত্তি, প্রবন্ধ পাঠ, নৃত্যনাট্য ইত্যাদি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠন এমনকি ঘরোয়া পরিসরেও এই দিনটি শ্রদ্ধার সঙ্গে উদ্যাপন করা হয়। এই আয়োজন শুধু স্মরণ নয়, বরং তাঁর দর্শন ও ভাবনার নতুন আবিষ্কার, নতুন ব্যাখ্যারও ক্ষেত্র।
বাঙালি জাতির ইতিহাসে ২৫শে বৈশাখ একটি গভীর তাৎপর্যময় দিন। এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন বাংলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক, বিশ্বকবির মর্যাদা প্রাপ্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর জন্ম ১৮৬১ সালের ৭ই মে, কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথ ছিলেন গভীর চিন্তাশীল, কাব্যপ্রবণ ও শিল্পমনস্ক।
তিনি শুধু একজন কবি নন—তিনি একজন উপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, চিত্রশিল্পী এবং দার্শনিক। তাঁর বহুমাত্রিক প্রতিভা বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে এক অনন্য উচ্চতায় উন্নীত করেছে।
রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন মানবতায়, স্বাধীনতায় এবং সৃষ্টিশীলতায়। তাঁর শিক্ষা-দর্শন ‘শান্তিনিকেতন’-এর মাধ্যমে বাস্তব রূপ পায়। তিনি চেয়েছিলেন একটি মুক্ত, সৃজনশীল ও মানবিক সমাজ—যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির মাঝে, স্বাধীন চিন্তার পরিবেশে নিজেদের বিকশিত করবে।
আজকের দিনে, যখন বিশ্ব এক গভীর সংকট ও বিভাজনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও কাব্যের আলো আমাদের পথ দেখাতে পারে। তাঁর সাহিত্য শুধু নান্দনিক নয়, বরং গভীর মানবিকতা ও দার্শনিকতায় পূর্ণ।
২৫ বৈশাখ শুধুমাত্র কবির জন্মদিন নয়, বরং একটি জাতির আত্মজাগরণের মুহূর্ত। তাঁর স্মরণে, তাঁর রচনায় আমরা নতুন করে আত্মবিশ্বাস পাই, পাই জীবন ও সমাজ গঠনের দিশা। তাই প্রতি বছর ২৫শে বৈশাখ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, “যেখানে ভয় নাই, সেখানে মাথা উঁচু করে বাঁচার” শিক্ষাই রবীন্দ্রনাথের চিরন্তন বার্তা।