শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে হলে সর্বপ্রথম তাদের তোষণনীতির অবসান ঘটাতে হবে। নেতা তুষ্টির প্রবণতা যতদিন থাকবে, ততদিন শিক্ষকসমাজ নিজ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না। যখন থেকে শিক্ষকরা অতি তোষণের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়েছেন, তখন থেকেই তাদের অধঃপতন শুরু হয়েছে। সম্মান রক্ষার জায়গা ঠিক রেখে নেতৃত্বনির্ভরতা কমাতে হবে। অধিকারের প্রশ্নে কোনো ব্যক্তির মুখের দিকে চেয়ে নয়, বরং নীতির ভিত্তিতে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। আপোষ নয়, আত্মমর্যাদাই হবে শিক্ষকের প্রধান হাতিয়ার।
একইসাথে, কোনো পেশাজীবি শিক্ষক সংগঠন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে না। একটি আদর্শ শিক্ষক সংগঠন সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হতে পারে না। রাজনৈতিক মত ভিন্নতা থাকতেই পারে—সব শিক্ষক একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করবেন, এমনটা কখনোই বাস্তবসম্মত নয়। কিন্তু তারা সবাই শিক্ষক, সেটাই মুখ্য। তাই অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সকল শিক্ষককে একক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে হবে, দলীয় বিভাজন পেরিয়ে। সংগঠন যদি কেবল নেতা তৈরির কারখানায় পরিণত হয়, তবে তা শিক্ষকসমাজের বৃহত্তর কল্যাণ নয়, বরং ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থসাধনেই ব্যস্ত থাকবে।
শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম যেন হয় আত্মমর্যাদার, একতার এবং নীতিনিষ্ঠতার। তোষণ, বিভাজন এবং দলীয় আনুগত্য নয়—শিক্ষকতা একটি মহান পেশা, একে তার যোগ্য অবস্থানে প্রতিষ্ঠা করতেই হবে।
মো: তানজিম হোসাইন
শিক্ষক ও সাংবাদিক