সোলায়মান, নাগরপুর টাংগাইল প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইল নাগরপুর উপজেলায় সরকারি নতুন পাঠ্যবই কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে এক ট্রাক বই জব্দ করেছে প্রশাসন। অভিযুক্ত আগদিঘুলিয়া এম বোরহান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবর রহমান পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে নাগরপুর উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের আগদিঘুলিয়া এম বোরহান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে এই অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত মোহম্মদ নোমান এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাদির আহাম্মেদ। স্থানীয়দের সহায়তায় একটি ট্রাকভর্তি সরকারি বই জব্দ করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান বইগুলো ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছিলেন এবং বইগুলো মির্জাপুরে পাঠানো হচ্ছিল।
ইউএনও আরাফাত মোহম্মদ নোমান বলেন, “সরকারি সম্পদ চুরি ও বিক্রির চেষ্টা গুরুতর অপরাধ। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।”
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাদির আহাম্মেদ জানান, “২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নতুন পাঠ্যবইসহ একটি ট্রাক থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।”
এ ঘটনার পর থেকে প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবর রহমান পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও ঘুষ ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে, ১৮ মে (রবিবার) সকাল ১০ টায় বোরহান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নেন মোকনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, বাগজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান সুমন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান, সমাজসেবক সুনীল সাহা সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে ঘুষ, নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত। সরকারি বই বিক্রির ঘটনায় তার তাৎক্ষণিক পদত্যাগ ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
শিক্ষার্থীরা স্লোগানে বলেন, “আমার প্রতিষ্ঠানে চোর কেন? বিচার চাই, প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ চাই।”
এদিকে, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে স্কুলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং পতাকা উত্তোলন না করে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
নাগরপুর থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, “উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে ট্রাক ও বই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এখন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর একমাত্র দাবি প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমানকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং পদত্যাগ করা।