মোঃনাজমুল মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু ও আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তনের ফলে কৃষি ব্যবস্থায়ও এসেছে নানা রকম পরিবর্তন—এমন মন্তব্য করেছেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাবিবুল্লাহ। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ করাই হবে কৃষকদের টিকে থাকার পথ।”
সোমবার (১৯ মে) মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী ‘ক্লাইমেট-স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও বলেন,
“জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই কৃষির অন্যতম হাতিয়ার হলো স্মার্ট প্রযুক্তি। বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে কৃষি উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।”
উদ্বোধনী দিনের কর্মসূচি শুরু হয় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে, যা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে অতিথিরা মেলার ১৪টি স্টল পরিদর্শন করেন, যেখানে উপকূলীয় এলাকার জন্য উপযোগী ২৫টিরও বেশি কৃষি প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী চাষপদ্ধতি প্রদর্শন করা হয়।
প্রদর্শনীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল: পলিমালচ প্রযুক্তি, সর্জন পদ্ধতি, টাওয়ার পদ্ধতি, মিনি-পুকুরভিত্তিক তরমুজ চাষ, রিলে ও আন্তঃফসল চাষ এবং আইলে লতানো সবজি চাষ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউএনও মো. হাবিবুল্লাহ। প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক রমেষ চন্দ্র ঘোষ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বদরুদ্দোজা, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার, প্রধান শিক্ষক মেরাজুল ইসলাম খসরু ও কৃষক সংগঠনের সভাপতি মো. ইউনুস আলী শেখ।
বক্তারা বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ ও অঞ্চলভিত্তিক উপযুক্ত ফসল নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারলে কৃষি উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি কৃষকের আয় ও জীবনমানও উন্নত হবে।”
তারা আরও যোগ করেন, “স্মার্ট কৃষির মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে, যা সমগ্র উপজেলার উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা সরাসরি প্রযুক্তি দেখে তা সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ ধরনের উদ্যোগ স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণে ও জলবায়ু সহনশীল কৃষি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।