মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
তারিখ: ৩০/০৫/২০২৫ ইং
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিডাব্লিউবি প্রকল্পের আওতায় ২৪ মাস শেষে অতিরিক্ত ৫ মাসের চাল বিতরণে অনিয়ম ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। জানা যায়, সরকারের নিয়মানুযায়ী দুই বছর মেয়াদি (২৪) মাসে ভিজিডি কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের সময়সীমা গত ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু অন্তরবর্তী সরকার এসে নতুন কোনো সুবিধাভোগীদের তালিকা না করায় জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিতরণ বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে কার্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি করায় পূর্বের কার্ডধারীরা এক সাথে ৫ মাসের ১শ ৫০ কেজি চাল বরাদ্দ পায়। সে সকল কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের কাছে থেকে চাল দেবার কথা বলে প্রতিটি কার্ডধারীর কাছে থেকে ১১শ টাকা করে ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যারা গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগকারীরা হলেন-ওই ইউনিয়নের দবিরগঞ্জ গ্রামের ভুক্তভোগি জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী আদুরী খাতুন, নজরুল ইসলামের স্ত্রী রেজেদা খাতুন ও জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সাথী খাতুন। তাঁরা জানান, দীর্ঘদিন ভিজিডি কার্ডের চাল বন্ধ ছিল পরে চাল এসেছে। চাল নিতে হলে জন প্রতি ১১শ টাকা করে দাবি করেন ইউপি সদস্য মোক্তার হোসেন। পরে আমরা ১১ শ টাকা দিয়ে ৫ মাসের চাল গ্রহন করি। পরে জানতে পারি এ অর্থ অবৈধ। এজন্য গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাতের
কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। চৈত্রহাটি গ্রামের চাঁদ আলীর স্ত্রী ভুক্তভোগী মানিয়া খাতুন, মৃত কোরবান আলীর স্ত্রী পিনজিরা খাতুন বলেন, ভিজিডি কার্ডের চাল নিতে আমাদের কাছে থেকে নায়েব আলী মেম্বর ১১শ টাকা করে নিয়েছে। ওয়াড মেম্বর যদিও আকবর আলী কিন্তু টাকা নিয়েছেন নায়েব আলী মেম্বর। আমরা গরীব মানুষ অন্যের কাছে থেকে টাকা ধার করে নিয়ে এসে সেই টাকা দিয়ে চাল গ্রহন করেছি। উনুখা গ্রামের কার্ডধারী সুবিধাভোগী হালিমা খাতুন জানান, দীর্ঘ কয়েক মাস ভিজিডি কার্ডের চাল বন্ধ ছিলো। গত সোমবার (১৯ মে) চাল সংগ্রহ করি। পরে বিকেলে আমার স্বামীর কাছে থেকে আকবর আলী মেম্বর ১১শ টাকা নিয়েছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগীরা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ছাইদুল ইসলাম মোগল এর নির্দেশে প্রতিটি কার্ডধারীর কাছে থেকে ১১শত করে টাকা উঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। আমরা দুর্নীতিবাজ প্রশাসকের অপসারণের দাবী করেছি। ইউপি সদস্য আকবর আলী বলেন, ভিজিডি কার্ডের চাল বিতরণের সময় কারোর কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা নেওয়া হয়নি। ইউপি সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান) নওজেশ আলী ওরফে নায়েব আলী বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমাদের ইউনিয়নে ভিজিডি চাল বিতরণে কারোর কাছে থেকে কোনো প্রকার টাকা নেওয়া হয়নি। তার পরেও কেউ যদি কোনো প্রকার টাকা নিয়ে থাকে খোঁজ নিয়ে জানাবো। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ছাইদুল ইসলাম মোগল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন কোনো ঘটনা যদি ঘটে থাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমিকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।