কামরুল ইসলাম চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা কর্তৃক ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র (এলজি), ১টি সিএনজি ও ২টি মোবাইল জব্দসহ ২জন আসামী গ্রেফতার, পটিয়া থানা কর্তৃক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ১৬টি মামলার আসামী মোঃ আব্দুল হামিদকে ১টি আগ্নেয়াস্ত্র (এলজি) ৩টি কার্তুজ ও দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার এবং সীতাকুণ্ড থানা কর্তৃক ১২টি গরু উদ্ধার ও ১জন আসামি গ্রেফতার।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক উদ্ধার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, অপরাধীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে জনমনে নিরাপত্তা বোধ জাগিয়ে তুলতে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নেতৃত্বে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।
পুলিশ সুপার জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম সানতু বিপিএম (বার) মহোদয়ের নির্দেশক্রমে নিয়মিত মাদক ও অবৈধ অস্ত্র-গুলি উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল গভীর রাতে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী থানাধীন টাইম বাজার এলাকায় কতিপয় অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী অস্ত্র-গুলি ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। তৎক্ষণাৎ পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশক্রমে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকশ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গভীর রাতে বৃষ্টিপাতের মধ্যে চেকপোস্ট করে।
অস্ত্র ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বার বার স্থান পরিবর্তন করে। গোয়েন্দা শাখার আভিযানিক দল আসামিদের গ্রেফতার এবং অবৈধ অস্ত্রগুলি উদ্ধারের উদ্দেশ্যে বাঁশখালী ও আনোয়ারা থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাতভর অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানের এক পর্যায়ে সকাল ৭:৩৫ মিনিটের দিকে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে সিএনজিতে বিশেষ কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৪টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারপূর্বক জব্দ করতঃ সিএনজি ড্রাইভার মীর হোসেন মিয়া এবং অস্ত্র ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃত আসামী ১) নজরুল ইসলাম পিতা- মৃত মফিজুর রহমান, মাতা- নুরজাহান বেগম, সাং- হাজী মফিজুর রহমানের বাড়ী, আনোয়ারা ইছমতি সড়ক, ০৪নং ওয়ার্ড, ০৭নং আনোয়ারা সদর ইউপি, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম, ২) মীর হোসেন মিয়া, পিতা- নুরুল ইসলাম বাশী, মাতা- রাজেয়া খাতুন, সাং- উত্তর নল বিলা, রাজুনির বর বাড়ী, ০১নং ওয়ার্ড, কালারমারছড়া ইউপি, থানা- মহেশখালী, জেলা- কক্সবাজার‘দ্বয়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় তৈরী আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত। এ সংক্রান্তে আসামী দ্বয়ের বিরুদ্ধে আনোয়ারা থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
পটিয়া থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম ২৮/৫/২৫ তারিখ ২:৫০ ঘটিকায় অভিযান পরিচালনা করে পটিয়া থানাধীন কাশিয়াইশ ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকায় জনৈক আঃ করিম এর মালিকানাধীন টিনসেড ঘর হতে ১৬টি মামলার আসামী দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ মোঃ আব্দুল হামিদ, পিতা-মৃত এখলাছ মিয়া, মাতা-সখিনা খাতুন, সাং-সাঁইদাইর (ছবুর ড্রাইভারের বাড়ী), ৬নং ওয়ার্ড, ৭নং জিরি ইউনিয়ন, থানা-পটিয়া, জেলা-চট্টগ্রামকে গ্রেফতার করেন। এ সময় তার হেফাজত হতে (১) ১টি দেশীয় তৈরি এলজি, (২) ৩টি কার্তুজ, (৩) প্লাষ্টিকের হাতলযুক্ত ধারালো ১টি চাইনিজ কুড়াল, (৪) ৩টি রাম-দা, (৫) ১টি ধারালো টিপ ছোড়া উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। এ সংক্রান্তে পটিয়া থানার মামলা নং-৩২, তারিখ-২৮/৫/২৫, ধারা- The Arms Act, 1878 Section 19A রুজু করতঃ আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গত ২৪.৫.২৫ তারিখ জনৈক আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ নোয়াখালী জেলার হাতিয়া বাজার হতে বিভিন্ন রংয়ের সর্বমোট ১২টি গরু ক্রয় করে এবং রাত অনুমান ১২:০০ ঘটিকার সময় হাতিয়া বাজার এলাকা হতে স্থানীয় ট্রাক ভাড়া করে গরুগুলো নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানা এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। ২৫.৫.২৫ তারিখ ভোর অনুমান ৪:৩০ ঘটিকার সময় গরু ভর্তি ট্রাক নিয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানাধীন সোনাইছড়ি ইউপিস্থ শীতলপুর মদনহাট এলাকা এস.এল স্টীল ফ্যাক্টরীর সামনে মহাসড়কে একদল ডাকাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্র, লোহার দা, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি দ্বারা ভয়ভীতি দেখিয়ে ১২টি গরু ভর্তি ট্রাক, নগদ ৭৪,০০০/- টাকা, ৬টি বিভিন্ন ব্যান্ডের মোবাইল ফোন, গাড়ীর কাগজপত্র এবং গরু ক্রয়ের রশিদ ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সীতাকুন্ড সার্কেল ও অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে সীতাকুন্ড মডেল থানার পুলিশ টিম ২৬.৫.২৫ তারিখ রাতে ১২টি গরু ও ছিনতাইকৃত ট্রাক সীতাকুন্ড মডেল থানাধীন ভাটিয়ারী এলাকার মোঃ তানজিদ হোসেন তামিম পিতা- মোঃ আবু তাহের, মাতা-মোছাঃ শাহনাজ বেগম, সাং- স্টেশন রোড, ভাটিয়ারী, থানা-সীতাকুন্ড, জেলা-চট্টগ্রাম এর হেফাজত হতে উদ্ধার এবং মোঃ তানজিদ হোসেন তামিমকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়াও চলতি মাসে অদ্যবধি পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার ১৭টি থানায় মোট ৭৩টি মাদক মামলা রুজু হয়, উক্ত মামলা সমূহে মোট ৯৭জনকে গ্রেফতার করা হয়। মাদক দ্রব্য গুলোর মধ্যে চোলাইমদ ১৩৪৬.৫ লিটার, ইয়াবা-৬৫,৭২১পিস, গাঁজা-১৪ কেজি এবং বিদেশী মদ-২ বোতল।
চলতি মাসে অদ্যবধি পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার ১৭টি থানায় মোট ১১টি অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলা সমূহে সর্বমোট ১৬জনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র গুলোর মধ্যে এলজি-১৮টি, একনলা বন্দুক-৪টি, রাইফেল-১টি, গুলি-১০রাউন্ড, কার্তুজ-৪রাউন্ড, দা/ছুরি-২৫টি। পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশক্রমে উপরোক্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরনে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সার্বক্ষনিক আপনাদের পাশে রয়েছে।