মারুফ সরকার, প্রতিবেদক :
ফ্যাসিস্ট আওয়ামি সরকারের ক্ষমতার প্রভাবে ডাঃ কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলনের বিরুদ্ধে চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিএমসিএইচ এবং বিএমএসআরআই-এর ব্যাপক দুর্নীতি, প্রাতিষ্ঠানিক দখল এবং ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার ভয়ঙ্কর চিত্র উন্মোচিত হয়েছে. তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাপ প্রয়োগ করে চেয়ারম্যান পদ দখল এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি, ছাত্রদের পরিক্ষায় ফেল ও মার্কশীট ডীন অফিস থেকে গায়েব করার হুমকিসহ বানোয়াট প্রমাণ তৈরি ও ব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে.
রাজনৈতিক পরিচয়ের দ্বৈত খেলা:
ডাঃ দোলনের এই কর্মকাণ্ডকে বিশ্লেষণে দেখা যায় তিনি রাজনৈতিক পরিচয়ের ক্ষেত্রে এক দ্বৈত খেলা খেলছেন। আওয়ামি দোষর আমলে আব্দুর রাজ্জাকের বিশ্বস্ত সহচর মেজর জেনারেল মো: রফিকুল ইসলাম (বিডিআর হত্যা মামলার টেম্পারিং করার অভিযোগে অভিযুক্ত), ইন্জিনিয়ার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, প্রিন্সিপাল পরিতোষ কুমার ঘোষ, ভাইস প্রিন্সিপাল ডা: দবির হোসেন(সাচিপ প্রেসিডেন্ট) সহ আব্দুর রাজ্জাকের ভাতিজা এবং বিসিএল নেতা নাভিদ আনজুম নিলিমের মতো ব্যক্তিদের নিয়েই এখনও বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটালে অনিয়মতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার করছেন ডক্টর দোলন. ডক্টর দোলনের সাথে এই সকল আওয়ামি দোসরদের উপস্থিতি দেখা যায় সর্বদা, যা তার আওয়ামী বলয়ে প্রভাব বিস্তারের ইঙ্গিত দেয়। অন্যদিকে, নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের “বিশ্বস্ত হাতিয়ার” হিসেবে প্রচার করেন। শফিক আহসান নামক এক ব্যক্তির ৩০শে এপ্রিলের লায়ন্স ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ বি৩-এর নির্বাচনে ডাঃ দোলনকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করে তার জন্য ভোট চাওয়া হয়, যেখানে তারেক রহমানের অসুস্থতা ও দুর্বলতার ছবি ব্যবহার করে ভোট আদায়ের এক ন্যক্কারজনক কারসাজির আশ্রয় নেওয়া হয়। এই দ্বিচারিতা এবং সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক কৌশল ডাঃ দোলনের ক্ষমতার অপব্যবহারের মূল ভিত্তি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই, ডক্টর দোলন মনোনয়ন পাওয়ার দুই মাস আগে থেকেই তিনি ফেইসবুকে নানা ধরনের কুরুচি ও কটূক্তি মুলক মন্তব্য করা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সালে অত্র কলেজের গভর্নিংবডির চেয়ারম্যান নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর উনি যেরকম আইন বহির্ভূতকার্যকলাপ শুরু করেন, তা ইতিপূর্বে কোন চেয়ারম্যান দ্বারা সংগঠিত হয় নাই। গভর্নিং বডিতে দুইজন ইলেক্টেড শিক্ষক প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে উনি নিজের ইছামতন শুধুমাত্র মানহীন তোষামদকারীদের নিয়োগ দেন. ঢাকা ভার্সিটির ডিন এর সাইন ছাড়াই প্রমোশন ও নিয়োগ প্রদানকরেছেন। ২০ বছরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদেড় আন্ত-ডিপার্টমেন্টাল বদলী করেযাচ্ছেন স্ব স্ব বিভাগীয় প্রধানদের অগোচরে হচ্ছে। উনার খারাপ কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ/ মত প্রকাশ করলে তাদের কে অকথ্য ভাষায়গালিগালাজ এবং চাকরী খেয়ে দেয়ার হুমকী, এমনকি জীবন নাশের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন অভিযোগ রয়েছে।ডক্টর আবরার, ডক্টর আদনান, ডক্টর ফরজানা মাকসুদ রুনা ডক্টর ফারজানা (জুলাই ২৪ অভ্যুত্থানের একজন সম্মুখ যোদ্ধা)কে শুধু মতামত প্রকাশ কড়ায় অন্যায়ভাবে তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ এর জেড় ধরে চাকুরিচ্যুত/ সাময়িক বরখাস্ত/ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ কথা রটিয়ে মানহানি করার মতোন স্বৈরাচারীতা করেছেন ডা.দোলন। ডা.দোলন জুলাই যোদ্ধা ফারজানা মাকসুদ রুনাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সাময়িক বরখাস্থের তদন্ত কমিটি করান সাচিপ প্রেসিডেন্ট ডা দবির হোসেনকে দিয়ে. ডা দবির হোসেনকে কনসালটেন্ট হিসেবে এক্সটেনশনও দেন সাচিপ প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও. অপরদিকে ফখরুল ইসলামকে DAB এর সভাপতি হওয়ার পরও এক্সটেনশন না দিয়ে উল্টো উনার রুম ভেঙ্গে অন্যদের বরাদ্দ দিয়ে দেয়া হয়. মহিলা টিচারদের সাথে উনি চরম দুর্ব্যবহার করেন, তাঁরাও গালি এবং অশ্লীল ভাষা থেকে রেহাই পায়নি । সিনিয়ার প্রফেসরদের সাথে তুই – তোকারি করে কথা বলেন এবং নির্দিস্ট ১০-১২ জন অনুসারীদের নিয়ে গুন্ডাবাহিনী তৈরী করে ত্রাসের রাজত্বসৃষ্টি করে ! ওনার জুনিয়র ক্যাডার বাহিনী দ্বারা কলেজের তিনজন শিক্ষক কে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেছেন এবং বিভিন্ন শিক্ষকদের নামে মিথ্যা মামলা করেন। জুনিয়ার ক্যাডার বাহিনীকে লেলিয়ে দেন টিচারদের প্রকাশ্যে বিভিন্ন ভাবে অপমান, উত্যক্ত, মন্তব্য ও পোস্টটারিং করেন। ডা:শাকিল, ডা: ফয়সাল, ডা:মন্ডল, ডা:ফুয়াদ, ডা: মুহিব, ডা:মেহনাজ,ডা:দিবা, ডা: হাসিনা, ডা: গিয়াস, ডা: জিয়া, ডা: নিলিম, ডা: আদেল, ডা: শিব্বীর সহ অনেকে তার অপকমের্র স্বরাসরী মদত ও ইন্ধনদাতা. প্রতিষ্ঠানের বাইরেও কিছু চিকিৎসক উনার অনুসারী হওয়ায় তাদেরকে নিয়মনীতি অমান্য করে নিয়োগ দিচ্ছেন গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই.
উনার বিরুদ্ধে গেলে ছাত্রদের পরীক্ষায় কেউ পাশ করলেও তাঁকে ডীন অফিস থেকে ফেল করানো হবে, মার্ক শিট গায়েব বলে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করেন ! উনার অনুগত প্রিন্সিপালকেঁ দিয়ে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান কলেজ এবং হাসপাতালে নিয়ম ভেঙে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রচুর শিক্ষক ও ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি কেনাকাটাতেও অনৈতিক সুবিধা আদায় করেছেন । ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচরীদেরও উনি উদাহরণ স্থাপনের জন্য ভয় ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে চাকুরিচ্যুত ও বেতন ও ভাতা বন্ধ করেন.
তিনি আন্তর্জাতিক সেবা সংগঠন লায়ন্স ক্লাবের নির্বাচন ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ বি৩-এর ২৯তম বার্ষিক ডিস্ট্রিক্ট কনভেনশনকে কেন্দ্র করে, যা গত ৯ই মে, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ডাঃ দোলন তৎকালীন জেলা গভর্নর সাব্বির রহমান সায়েমকে সঙ্গী করে যিনি নিজেই আর্থিক লোপাট ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং বর্তমানে পলাতক, তার সাথে এবং কেবিনেট সেক্রেটারি ও ট্রেজারারের সাথে এক গোপন আঁতাত গড়ে তোলেন। পরিশেষে আমেরিকান অবজার্ভার ৯ই মে বিকালে লায়ন্স ডামি নির্বাচন বাতিল করেন।সর্বশেষ গত ২৯শে মে লায়ন্স পুনঃনির্বাচনে ডাঃ দোলন শুধুমাত্র ৩ ভোট পেয়েছে ১২৯ ভোটের মাঝে এবং পরাজিত হয়েছে.তবুও সে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করে নিজের ফেইসবুক দিয়েছে যা এক রকম প্রতারণা ও জালিয়াতি।
সম্ভাব্য পরিণতি:
ডক্টর মাযহারুল ইসলাম দোলন গত সেপ্টেম্বর ২০২৪ এ বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ এ নিয়োগ জোড়পূবর্ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর নাম ব্যাবহার করে নিয়োগ পান. যার মেয়াদ ১৪ই জুন ২০২৫ এ শেষ. কিন্তু উনি বিভিন্ন মহলকে তার মিথ্যা উন্নয়ণের গল্প শুনিয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ এ আবারও নিয়োগ বৃদ্ধির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন যা বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিবেন বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিচ্ছেন. ঢাবি ভিসি, প্রো ভিসি, ইন্সপেক্টর, ডিন যদি ডাঃ দোলনের মতো বিতর্কিত ব্যক্তিদের আবারও বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজে নিয়োগ দেন,তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা এবং সংগঠনের স্বচ্ছতা চিরতরে হারিয়ে যাবে।