দেলোয়ার হোসেন পাঁচবিবি জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
খেজুর গাছ একটি বহুবর্ষজীবী পাম জাতীয় গাছ, যা মূলত মরু অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ফল গাছ হলেও এখন বিশ্বের বিভিন্ন উষ্ণ ও উপউষ্ণ অঞ্চলে চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও এর চাষ বাড়ছে ধীরে ধীরে।
খেজুর গাছ দেখতে লম্বা ও সরু কান্ডবিশিষ্ট। এ গাছ সাধারণত ১৫-২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর পাতা লম্বা ও খেজুর জাতীয় অন্য গাছের মতো পাখার মতো ছড়ানো থাকে। প্রতি গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল পৃথকভাবে জন্মে বলে ফল পেতে হলে নারী গাছের ফুলে পরাগায়ন করতে হয়।
খেজুরের ফল লম্বাটে এবং বিভিন্ন প্রজাতির ভিত্তিতে রঙ হতে পারে হালকা বাদামি থেকে গাঢ় বাদামি পর্যন্ত। কাঁচা অবস্থায় এটি তেতো হলেও পাকলে মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়। খেজুরের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এতে প্রাকৃতিক শর্করা (গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ) প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। এতে ফাইবার, আয়রন, পটাশিয়াম ও ভিটামিন-বি সমৃদ্ধ থাকে, যা দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
খেজুর গাছ বেলে ও দোআঁশ মাটিতে ভালো জন্মে। বিশেষ করে খরাপ্রবণ ও শুষ্ক জলবায়ু এ গাছের জন্য উপযুক্ত। বর্তমানে সৌদি আরব, মিশর, ইরান, আলজেরিয়া, ও আরব আমিরাতে সবচেয়ে বেশি খেজুর উৎপাদিত হয়। তবে ভারত ও বাংলাদেশেও সীমিত আকারে খেজুর গাছের চাষ ও ফলন দেখা যাচ্ছে।
খেজুর প্রাকৃতিক শক্তির উৎস।
ফাইবার থাকার কারণে হজমে সহায়ক।
এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
মুসলিম ধর্মীয় সংস্কৃতিতে রোজা ভাঙার জন্য খেজুর খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্রতা বহন করে।
খেজুর ইসলাম ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল। নবী মুহাম্মদ (সা.) খেজুরকে পছন্দ করতেন এবং রোজা ভাঙার সময় প্রথমে খেজুর খাওয়ার সুন্নত রয়েছে। এছাড়াও, খেজুর হাদিস ও কোরআনে বহুবার উল্লেখিত হয়েছে।
খেজুর গাছ শুধু একটি ফলদ বৃক্ষ নয়, এটি ঐতিহ্য, পুষ্টি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতীক। বাংলাদেশের জলবায়ু ও প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে খেজুর চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে তা অর্থনৈতিক ও পুষ্টি নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।