স্টাফ রিপোর্টার মেহেরুল ইসলাম মোহন
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষার সময় কেন্দ্রের ভেতরে ছাত্রদল নেতার অনধিকার প্রবেশ এবং ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় এক কেন্দ্র সচিবক শোকজ ও চার শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)সকালে বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রের ২০৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানা গেছে, পরীক্ষা চলাকালে বনপাড়া শহর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব সরদার পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে একাধিক কক্ষে ঘুরে ঘুরে পরীক্ষার্থীদের ‘নির্দেশনা ও সাহস’ দিতে থাকেন। এ সময় কেন্দ্রের নিয়ম ভঙ্গ করে তাঁর এক সহযোগী স্মার্ট ফোন দিয়ে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন।এ নিয়ে
সাধারণ পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে, স্থানীয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। অভিযুক্ত রাকিব সরদার বনপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব সরদার রফিকের ছেলে বলে জানা গেছে।
ঘটনার পরপরই কেন্দ্রসচিব ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোহিনুর খাতুনকে শোকজ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ২০৫ নম্বর কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত চার শিক্ষক মোসাদ্দেক হোসেন,নারগিস আলম,মতিউর রহমান ও তসলিম উদ্দিন কে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বড়াইগ্রাম থানার (ওসি)গোলাম সারওয়ার হোসেন সংবাদ কর্মীদের জানান, ইউএনও মহোদয় আমাকে এ বিষয়ে অবহিত করেছেন। ইতোমধ্যে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, তিনি সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে উপস্থিত অভিভাবক ও বহিরাগতদের কেন্দ্রের বাইরে সরিয়ে দেন। শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শন দলও সে সময় কাজ শেষে কেন্দ্র ত্যাগ করে। ইউএনও আরও জানান,ছাত্রদল নেতা হয়তোবা তখনই পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করেছিলেন। পরে ফেসবুকে ছবি ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি আমার নজরে আসলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
কেন্দ্রসচিব ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোহিনুর খাতুন জানায়,ঘটনাটি আমার অগোচরে ঘটেছে। তবে আমি নিশ্চিত, প্রশ্নপত্র বিতরণের আগেই অভিযুক্ত ব্যক্তি কেন্দ্র ত্যাগ করেন। তিনি আরও জানান, ‘সতর্কতার অংশ হিসেবে চারজন কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে,এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ভেতরে শুধুমাত্র পরীক্ষার্থী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের ১০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকে, যা রাকিব সরদার ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরীক্ষাকেন্দ্রে স্মার্ট ফোন বহনও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।