মো: মোসলেম উদ্দিন সিরাজী
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
তারিখ: ২৭/০৬/২০২৫ ইং
ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের দুর্নীতি ও প্রতারণার কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারল না তিন পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখায়। রাজু এই প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী। ২৬ জুন বৃহস্পতিবার থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী পরীক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা হলো, উপজেলার পূর্বদেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মোঃ রাজু আহমেদ, হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহাদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। এরা সবাই উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের প্রচলিত নিমানুযায়ী এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা। পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তারা নির্দিষ্ট সময়ে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএম শাখায় ভর্তি হন। প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুযায়ী তারা অভ্যন্তরীণ সকল পরীক্ষাও দিয়েছে। প্রথম বর্ষ সমাপনীর বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য তারা ২৬০০ টাকা করে এই প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী মোঃ রাজু আহমেদের কাছে জমা দেন। কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার (২৫ জুন) পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনতে গেলে তারা জানতে পারেন তাদের ফরম পূরণ হয়নি। শিক্ষা বোর্ড থেকে তাদের প্রবেশপত্র আসেনি। এদিকে প্রবেশপত্র কেন আসেনি জানতে চাইলে তাদেরকে আসসাস্ত করে রাজু আহমেদ বলেন, পরীক্ষার পূর্বে যথাসময়ে তাদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হবে। অবশেষে পরীক্ষার দিন গিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন তাদের ফরম পূরণই হয়নি এবং রাজু আহমেদ ও পালাতক। অভিযোগকারীরা জানান, ইতোমধ্যে তারা এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ও স্কুলের সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে এই প্রতারণা এবং তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাবার জন্য রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া মর্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নানের সঙ্গে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তাকে আগে জানানো হয়নি। বর্তমানে রাজু আহমেদ পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, তার ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদ এর আগে ও স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেবার কথা বলে অনেক অভিভাবকের কাছে থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভর্তি করে দিতে পারেনি। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়। এ বছর আবারও দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র স্কুলের সভাপতিকে অনুরোধ করেছেন। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, কথিত শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত বিষয়টির তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন প্রাথমিকভাবে ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলে যা হবার হয়েছে আমি এখন বাঁচতে চাই।
অপর দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবক বলেন আমরা অএ প্রতিষ্ঠানে যে কোনো কাজের জন্য গেলে টাকা – পয়সা ছাড়া কাজের কোনো গুরুত্ব পাওয়া যায় না।