1. Jahidksb@gmail.com : Jahid Hasan : Jahid Hasan
শ্রীবরদীর ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে থামছেই না দালালদের দৌরাত্ম - খবর সকাল বিকাল - Khobor Sokal Bikal    
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ০১:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
দীপংকর তালুকদার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এখন বিলাইছড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লিফলেট বিতরণ নরসিংদীর শিবপুর মাদক নির্মূলে প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন । মুঃ আব্দর রহিম,এসি ল্যান্ড শিবপুর দুমকি উপজেলায়, নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার, হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছ প্রশ্নফাঁস সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় সালেহা ইসহাক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার আলী নিরব বিপ্লবের ডাক: অন্তরের দরজায় আলোর হাতছানি হারানো শিশু সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তি দুমকি উপজেলায়, দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে চাকরি থেকে বরখাস্ত অফিস সহায়ক মিজান তালুকদার দিনাজপুর ইনস্টিটিউটের ১২০তম বর্ষপূর্তি: নৃত্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ চাকরি হারানোর বেদনা নিয়ে রাস্তায় আল-আরাফাহ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

শ্রীবরদীর ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে থামছেই না দালালদের দৌরাত্ম

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
  • ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

 

মোহাম্মদ দুদু মল্লিক,শেরপুর: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ঘুষ ছাড়া কোন কাজই যেন হয়না বেশীরভাগ ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে।প্রতিটি ভূমি অফিসে দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলে এই ঘুষ লেনদেন। কিছু দলিল লেখক ও স্থানীয় কিছু টাউট প্রকৃতির লোকেরাই হচ্ছে এই দালাল সিন্ডিকেটের সদস্য। জমিজমা দলিল করতে যে কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তার সাথে ভূমি অফিসের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বিভিন্ন ইউনিয়নের নানা অভিযোগ ছাড়াও প্রতিনিধির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তার অফিসে অবৈধ টাকা লেনদেনের একাধিক ভিডিও চিত্র প্রকাশ পেয়েছে।এলাকাবাসীর অভিযোগ, নামজারি,ভূমি বিষয়ক বিভিন্ন প্রকারের সার্টিফিকেট প্রদান,ভূমি বিষয়ক অভিযোগ নিষ্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তির লিজ নবায়নের কাজে টাকা দিতে হয় মাঠ পর্যায়ের এসব ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।দোকান থেকে আবেদন করে অফিসে গিয়ে আবেদনের বিষয়টি জানানোর প্রথম ধাপেই সেবাগ্রহিতাদের কাছ থেকে নেয়া হয় ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। এছাড়াও কাজের গুরুত্ব বিবেচনায় হাজার হাজার টাকা গুনতে হয় সেবা গ্রহিতাদের। আবার টাকা দেয়ার পরে কাগজ দেয়া নিয়ে ঘুরতে হয় মাসের পর মাস।এছাড়াও এ প্রতিনিধির হাতে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়নের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা অনেক হাসিখুশিতে স্থানীয় দালাল ও সেবা গ্রহণকারীর কাছ থেকে টাকা গুনে নিচ্ছেন। টাকা গণনা শেষে নিজের ব্যক্তিগত ভাবে টাকা রেখে দিচ্ছেন।সেই ভিডিও এর সাউন্ডে সার্টিফিকেট প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।এছাড়াও অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক বৃদ্ধ টাকা গুনে সেই কর্মকর্তাকে দিচ্ছেন। অনেক যত্নে টাকা সাথে সাথে গুনে নিজের কাছে রাখছেন এবং দুইদিন পর তাকে এসে কাগজ বুঝে নেয়ার কথা বলছেন।এই ভিডিও গুলোর বিষয়ে বক্তব্য চাইতে গেলে স্থানীয় সেই দালালরা সাংবাদিকদের খবর না করার জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়াও খবর করলে ভালো হবেনা বলে হুমকি দেন যুবদল পরিচয়ের এক নেতা।স্থানীয়দের অভিযোগ,সাত মাস আগে যোগদান করা এই কর্মকর্তা ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করেন না। নামজারি কিংবা খারিজ নিতে তাকে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। শুধু তাই নয়,জমিজমার বিষয় খোঁজ নিতে গেলেও তাকে দিতে হয় ঘুষ। মূলত জমিজমা সংক্রান্ত যেকোন কাজে ঘুষ নেয়া যেনো তার নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তিনি নয়,উপজেলার প্রতিটা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের চিত্র প্রায় একই। প্রতিটা অফিসে রয়েছে দালাল সিন্ডিকেট। ভূমি অফিসে সেবা নিতে গেলে প্রতি জায়গায় পদে পদে দিতে হয় ঘুষ,না দিলে নানান ঝামেলায় পড়তে হয় সেবাগ্রহীতাদের।স্থানীয় বাসিন্দা এডভোকেট মো.শাহজাহান বলেন,গত ৫ তারিখ ঘিরে ছাত্রজনতার যে আকাঙ্ক্ষা ছিলো সরকারি সেবায় কোন বৈষম্য হবেনা। কোন দপ্তরে ঘুষ দুর্নীতি চলবে না। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।আমি যেহেতু এই অফিসের সাথেই থাকি,এই অফিসে বিন্দু পরিমান দুর্নীতি বন্ধ হয় নাই। বরং সেবাপ্রার্থীরা বাড়তি টাকা দিয়েও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। আমি এই এলাকার পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো,যেন ভূমি অফিসগুলোর দিকে নজরদারি করা হয়। প্রকৃত সেবা গ্রহণকারীরা যেন সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন বলেন,আমি একটি কাজের জন্য দুই বছর যাবৎ সরকারি খরচের চেয়ে অনেক বেশি টাকা বাড়তি দিয়েও ঘুরতেছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না। আগের কর্মকর্তা চলে গেছে তাই এখন নতুন কর্মকর্তার কাছেও পাত্তা পাচ্ছিনা।এছাড়াও তিনি বলেন,এই অফিসে একটা কাজ টাকা ছাড়া হয়না। আগে যেভাবে অফিস চলছে এখনও তেমনই রয়েছে।লঙ্গরপাড়ার কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন,আমি জমির খারিজ করার জন্য গিয়েছিলাম আমার কাছে নায়েব ১০ হাজার টাকা দাবি করছে। আমি টাকাও দিবার পাইনাই খারিজটাও হয়নাই।বীরবান্দা এলাকার আলমগীর হোসেন বলেন,আমার পরিবারের একটি আবেদন কম্পিউটার দোকান থেকে করে নায়েব সাহেবের কাছে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আমার কাছে এক হাজার টাকা চাইছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, মানুষ আসলেই টাকা আগে,পরে কাজ। স্থানীয় দলিল লেখকরা হচ্ছে তাদের মূল দালাল। তাদের মাধ্যমেই বড় বড় অনিয়মের কাজ গুলো করে চলছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে টাকা নেয়ার পরেও গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্বোতন কর্মকর্তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া একান্ত দরকার।এ বিষয়ে শেরপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শেরপুর মডেল গার্লস কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তপন সারোয়ার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,দুর্নীতি মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেন সমাজে মধ্যে বাজে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। সরকারি ফ্রি এর বিপরীতে বাড়তি টাকা নেয়া আইনবিরোধী কাজ এবং মানুষের উপর একটা জুলুম। গরিব মানুষের এতে জুলম করা হচ্ছে বারতি হয়রানি করা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকের অবশ্যই বিষয়টি কঠিন হাতে দমন করার দরকার জুরুরি ভাবে।বিশিষ্ট সমাজসেবক ও মানবাধিকার কর্মী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন,এতো সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করার পরেও দুর্নীতি বন্ধ করা যাচ্ছে না যা অত্যন্ত বিপদজনক। এ সমস্ত নৈতিক অবক্ষয়প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া উচিত। সরকার ক্যাশলেস ডিজিটাল পদ্ধতিতে অফিস করার পরও হাতে লেনদেন কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি দেশের নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। তাদের প্রতিবাদী হতে হবে এবং নিয়মের বাইরে কোন টাকা যেন লেনদেন না করে সেটাও তাদের দায়িত্ব।তবে অভিযোগের ব্যাপারে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানার কার্যালয়ে গিয়ে তার বক্তব্য চাইলে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নানা অজুহাত দিয়ে মুঠোফোন নিয়ে বাথরুমে চলেযান। ১৫ মিনিট পর বের হয়ে উল্টো সাংবাদিকদের প্রতি তাকে হয়রানির অভিযোগ তুলেন এবং তিনি কোন ঘুষ নেননি বলে সাংবাদিকদের জানান।এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন,সরকার ভূমি সেবাকে জনগণের দুয়ারে পৌঁছে দেয়ার জন্য ডিজিটাল প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।এখানে জনসাধারণ যাতে হয়রানি না হয় সে ব্যাপারে তিনি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ২০২৪  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি