যশোর প্রতিনিধি ঃ ভারত হতে আমদানিকৃত পণ্যের শুল্ক ফাঁকি চেষ্টায় বেনাপোল কাস্টমস হাউসে জালজালিয়াতির আদলে কাগজপত্র দাখিল করেছেন আমদানিকারক প্রতিনিধি এসএ ট্রেডার্স যাহার সত্তাধিকারী বেনাপোল ৪ নং ইউনিয়নের আওতাধীন খড়িডাঙ্গা গ্রামের সাহেব আলী। বেনাপোল স্থলবন্দরে থাকা পণ্য চালানটি খালাস নিতে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন ) এস এ ট্রেডার্স বেনাপোল কাস্টমস হাউসে ডকুমেন্টস দাখিল করেন। যাহার সি – নাম্বার-৪৮৯০০ ও তারিখ ২৮/৫ /২০২৫ ইং। পণ্য চালানটির ম্যানুফেস্ট নং-২০২৫২১৯, ইউএসডি-৩৯৮৪৪ ডলার এবং আমদানি কারক যশোরের ট্রাস্ট এন্টারপ্রাইজ। ইতিমধ্যে দাখিলকৃত ডকুমেন্টসের বিষয়ে তদন্ত করছে কাস্টমস কর্তৃপহ্ম। পণ্য খালাস নিতে কাগজপত্র দাখিলের সত্যতা নিশ্চিত করে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ইন্টিগ্রেটেড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ( আইআরএম )-এর রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ মনিউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ‘‘এসএ ট্রেডার্স’’ একটি বিলঅফএন্ট্রি সাবমিট করে যার আমদানি কারক ‘ট্রাস্ট এন্টারপ্রাইজ’।প্রাথমিকভাবে এলসি পেপার ও অন্যান্য কাগজপত্র জাল প্রতীয়মান হয়েছে। তদন্ত ও সঠিক যাচাই বাছায়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। ব্যাংক কপি আসলে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারবো।কি ধরনের পণ্য আমদানি করা হয়েছে জানতে চাইলে অ্যাসোট্রেড গুডস আইটেম বলে তিনি আরো জানান। এ বিষয়ে সি এন্ড এজেন্ট মালিক সাহেব আলীর নিকট জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোন জানান, তিনি তার লাইসেন্সটি বেনাপোল গ্রামের ইকরামুল কবীর সোহাগের নিকট বিক্রি করে দিয়েছেন। লাইসেন্স বিক্রি বিধিসন্মত ভাবে হয়েছে কি জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে সংযোগ কেটে দেন। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়,বেনাপোল স্থলবন্দরে শুল্ক ফাঁকি চক্রের অন্যতম সদস্য সোহাগ। যশোর
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের খালাতো ভাই হওয়ার সুবাদে যুবলীগ নেতা সোহাগ আওয়ামী সরকারের দীর্ঘ সময়কালে কাস্টমস হাউসে রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে যা সুষ্ঠু তদন্তে বের হবে। ক্রয়সূত্রে লাইসেন্স প্রাপ্ত সি এন্ড এজেন্ট মালিক সোহাগ মুঠোফোনে জানান,কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার প্রকাশ দে ছুটিতে রয়েছেন,তিনি এসে কাগজপত্রের সমস্যা সমাধান করবেন। এ ঘটনায় বেনাপোল সি এন্ড এজেন্ট পাড়ায় শোরগোল শুরু হয়েছে। আওয়ামী সরকার পতনের পর দেশব্যাপী আওয়ামীলীগের দোসররা অপমান অপদস্ত হলেও সোহাগ কিভাবে সরকারি রাজস্ব ফাঁকির পায়তারা চালাচ্ছে?এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, বেনাপোলের বিএনপির এক হাইপ্রোফাইল নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তারই ছত্র ছায়ায় কাস্টমস হাউসে ছড়ি ঘোরাচ্ছে এই সোহাগ। ইতিমধ্যে সোহাগ তার অপকর্ম ঢাকতে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের একাধিক অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে জালজালিয়াতির আদলে দাখিলকৃত ফাইল সরাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার শরিফুল হাসান জানান,জাল কাগজপত্র দাখিলের বিষয়টি তিনি অবগত নন,খোঁজ নিয়ে জানাবেন। তবে কেউ এ ধরনের অপচেষ্টা চালালে তদন্তপূর্বক প্রমানিত হলে অবশ্যই সি এন্ড এজেন্ট প্রতিষ্ঠান শাস্তির আওতায় আসবে।