1. Jahidksb@gmail.com : Jahid Hasan : Jahid Hasan
লালপুরে বিলুপ্তির পথে খেজুর পাতার পাটির ঐতিহ্য,স্থান দখল করেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন পন্য - খবর সকাল বিকাল - Khobor Sokal Bikal    
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
ধামইরহাটে বাল্যবিবাহে সহযোগিতার দায়ে মেয়ের মাকে ছয় মাসের জেল দিল ইউএনও গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে( দুদক )- এর অভিযান সৈয়দ রুহুল আমিন স্মৃতি একাডেমী’তে সিইও হিসেবে যোগদান করবেন মো: আবদুস সাত্তার কলকাতা সহ সারা দেশে পালিত হল স্বামী বিবেকানন্দের ১৬২ তম জন্ম দিবস ঢাকার শ্যামলীতে শীতার্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ মুন্সীগঞ্জে কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না, সে যে দলের হোক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিবেকানন্দ সেবা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে, মনীষী স্বামী বিবেকানন্দের ১৬২ তম জন্ম দিবস পালন করলেন রাজৈরে বিএনপির ৩১দফার লিফলেট বিতরণ গফরগাঁওয়ে হাতিখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন মুন্সীগঞ্জ জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

লালপুরে বিলুপ্তির পথে খেজুর পাতার পাটির ঐতিহ্য,স্থান দখল করেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন পন্য

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে

 

স্টাফ রিপোর্টার মেহেরুল ইসলাম মোহন

নাটোরের লালপুরে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হাতে বোনা সেই খেজুর পাতার পাটি আর দেখা যায় না। এক সময় এই উপজেলার প্রতিটি পরিবারের কাছে খেজুর পাতার পাটির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সময়ের বিবর্তনে তা এখন বিলুপ্তির পথে।
প্রথমে খেজুর গাছ থেকে খেজুরের ডাল কেটে রোদে শুকানো,ডালের গোড়ার অংশ এবং পাতার সামনের অংশ কেটে ফেলা,ডাল থেকে পাতা ছাড়ানো,পাতা দুটি ভাগে বিভক্ত করা,ভাগ হয়ে গেলে পাতার টুকরোগুলি পাটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় হিসাবে প্রস্তুত করে অবশেষে লম্বা অংশ বোনা,পরে এই লম্বা অংশ জোড়া দিয়ে একটি সম্পূর্ণ পাটি তৈরি করার দৃশ্য আর চোখে পড়ে না।
এক সময় এই খেজুর পাতার পাটি ছিল গ্রাম বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।
৮০- ৯০ দশকে খেজুর পাতার পাটি এ উপজেলার সাধারন মানুষের ঘরে ঘরে নিত্য প্রয়োজনে ব্যবহার হতো। অনেকে খেজুর পাটিতে ধান শুকানোর কাজ করতো।আদিবাসী নারী-পুরুষরা ছাতার বদলে খেজুর পাটির তৈরী ঘোমটা বৃষ্টি আটকানোর ঢাল হিসাবে ব্যবহার করত।বর্তমান আধুনিকতায় ছোঁয়ায় মানুষের জীবন মানের পরিবর্তনের ফলে খেজুর পাতার পাটি হারিয়ে গেছে। মানুষের পারিবারিক ব্যবহার্য্য উপকরন ঐতিহ্যবাহী সেই পাটির স্থান দখল করে নিয়েছে আধুনিক শীতলপাটি,নলপাটি,পেপসি পাটি,বিভিন্ন ধরনের চট ও কার্পেট,মোটা পলিথিন সহ নানা রকমের উপকরন।এই উপকরন গুলো সহজেই বাজারে পাওয়া যাওয়ায় মানুষ খেজুর পাটির পরিবর্তে এসব আধুনিক উপকরন ব্যবহারে দিন দিন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে হারিয়ে গেছে খেজুর পাতার পাটির কদর।তবে হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্যবাহী খেজুর পাতার পাটিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন অনেক মুরব্বি দাদি-নানীরা।
এ ব্যাপারে উপজেলার বিলমাড়িয়া,হালুয়া ডাঙ্গা,গন্ডবিল ও পাইকপাড়া এলাকায় বৃদ্ধ দাদি-নানিদের সাথে খেজুর পাতার পাটির বিষয়ে কথা হলে তারা বলেন,আমরা এক সময় খেজুর পাতা সংগ্রহ করে সংসারের সকল কাজকর্ম সেরে অবসর সময়ে পাটি তৈরি করতাম।এই পাটি আমাদের নিজেদের পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে অন্যদের কাছে বিক্রিও করতাম।পাটি বিক্রি করে যে টাকা পাই তা সংসারের অভাবের সময় ও ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার কাজে ব্যয় করতাম।কিন্তু এখন আর তা হয়না।আধুনিক যুগে পরিবর্তন এসেছে,প্লাস্টিক ও পলিথিন পন্য পাটির জায়গা দখল করেছে।তবুও আমরা বর্তমানে পরিবারের কাজে ব্যবহার করতে ২/১ খানা পাটি মাঝে মাঝে বুনে থাকি।
একই উপজেলার বাসিন্দা মালতি,বাসন্তি ও মায়া রানী বলেন,আগের মতো আর খেজুর গাছও নেই, খেজুরের পাতাও পাওয়া যায় না। ফলে পাটি তৈরীর প্রধান উপকরন খেজুর পাতার অভাবে খেজুর পাটি বিলুপ্ত হতে চলেছে। এ পাটি তৈরীকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন খেজুর গাছ ও পাতা।
এ বিষয়ে বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুর রহমান বলেন,আগেকার দিনে গ্রামাঞ্চলে খেজুরের শুকনো পাতা দিয়ে পাটি তৈরি করা হতো। প্রায় বাড়িতে এ পাটি দেখা যেত। এখন এ পাটির বদলে দখল করেছে প্লাস্টিকের পাটি, পলিথিনসহ আধুনিক বস্তু ও জিনিসপত্র। তাছাড়া খেজুর গাছের সংখ্যাও অনেক হ্রাস পেয়েছে। তাই এখন আমাদের মাঝ থেকে খেজুরের পাটিও প্রায় বিলুপ্তির পথে।
এ প্রসঙ্গে লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন,এ উপজেলায় দিন দিন কমছে খেজুর গাছের সংখ্যা। খেজুর গাছের সংখ্যা কমার কারণে খেজুর গাছের পাতা দিয়ে তৈরি খেজুরের পাটিও বিলুপ্তির পথে।কৃষকরা সবাই যদি বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করে তাহলে এই পাটির কদর পুনরায় ফিরে আসবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ২০২৪  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি