শোয়েব তাসিন পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি :: “নারী তুমি যা ভাবো তাই করতে পারো” এমন ভাবেই সাধারণ কিশোরী থেকে অসাধারণ মেয়ে হয়ে ওঠে নুসরাত জাহান নেহা। বয়স যখন ১০ তখন থেকেই ছোটো প্রাণবন্ত নেহা যেন আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন দেখে ছোট বেলা থেকেই। তার ইচ্ছে সে সব হবে সেই স্বপ্ন প্রেক্ষাপট সামনে রেখে নেহা আজ সফল কিশোরী বাধা বিপত্তি পেরিয়ে চমৎকার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় তার বেশ সুনাম রয়েছে।
পাথরঘাটা তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমির নবম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান নেহা। সে ২০১৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত পরাপর ৫ বার দীর্ঘ লাফে পাথরঘাটায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ড গড়েছে৷ নেহা দীর্ঘ লাফের পাশাপাশি অন্যান্য আউটডোর ও ইনডোর খেলায়ও কয়েকবার পুরষ্কার পেয়েছে বিজয়ী হয়েছে।
ছোট বেলা হতেই ইচ্ছে ছিল নাচ,গান,খেলাধুলা সহ নানান একটিভিটিতে সে থাকবে। ২০২২ এবং ২০২৩ লোকসংগীত প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ গায়িকা , শ্রেষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবক – ২০২৪ হিসেবে মনোনীত হয়েছে তা ছাড়াও সম্মানিত বিভিন্ন ব্যাক্তি বর্গের সাথে রয়েছে তার পুরস্কার প্রাপ্তির স্মৃতি। সমাজে নারীরা কোন দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই এর বাস্তব উদহারন হিসেবে ধরা যায় নেহাকে সে সামাজিক কাজেও বেশ অবদান রাখতেছেন বর্তমানে অরাজনৈতিক একটি সংগঠনে সভাপতি পদে দায়িত্বরত রয়েছে। স্থানীয় যুব কিশোর কিশোরীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন স্থানীয় সমাজসেবী সংগঠন তারুণ্যের বাংলাদেশ যুব সংস্থা। এই সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যুবদের সংগঠিত করার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নেহা জানান, ” ২০১৯ সালে মায়ের অনুপ্রেরণায় কোনো চর্চা ছাড়াই দীর্ঘ লাফ প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। অন্যসব মেয়েদের মত নিজেকে চারদেয়ালে বন্দি করিনি। সচরাচর মেয়েরা ক্রীড়া এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আসেনা এবং পরিবার হতে সে সহযোগীতা পায় না৷ কিন্তু এই প্রথা ভেঙে আমি অংশ নিয়েছি এবং বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। সমাজের সমালোচনা মুখোমুখি হয়েও থমকে জায়নি। আমার স্বপ্ন একদিন বিশ্বআসরে দেশের ক্রীড়ার প্রতিনিধিত্ব করে বিজয়ী হয়ে পুরষ্কার আনবো । এছাড়াও সামাজিক বিভিন্ন সেচ্ছাসেবায় কাজ করতেও আমার ভালো লাগে। সকলে মিলে চেষ্টা করলে একদিন সুন্দর হবে আমাদের সমাজটা। “
যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে কথাটি নেহার ক্ষেত্রে একদমই প্রযোজ্য। নেহা একজন কিশোরী হয়ে যেমন ক্রীড়া ক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে তেমনি সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারদর্শী। বিভিন্ন সময় গান, নাচ, আবৃত্তি, বক্তৃতায় সে পুরষ্কার পেয়েছে। অনেকের কাছেই সে ক্রীড়াবিদ নেহা হিসেবে অধিক পরিচিত। আবার তেমনি সেচ্ছাসেবী হিসেবে সুখে দুখে সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায় কিশোরী নেহা। নিজেকে চার দেয়ালে বন্দি না করে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে অসাধারণ কিশোরী নেহা।