উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃ
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অতি কষ্টে জীবন নির্বাহ করছে সাধারণ মানুষ। অনেক মানুষ প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। এই দুর্ভোগ লাঘবে দরিদ্র পরিবারের ৫০ শিক্ষার্থীকে মোট ৪০০ হাঁসের বাচ্চা উপহার দিয়েছে নওগাঁ বন্ধুসভা। প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি ভালো কাজের অংশ হিসেবে বন্ধুরা এ উদ্যোগ নেন। ২৬ অক্টোবর দুপুরে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীদের এগুলো উপহার দেওয়া হয়। প্রত্যেককে মোট আটটি করে হাঁসের বাচ্চা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকেরাও এসেছিলেন এগুলো নিতে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ, প্রধান শিক্ষক রাজিত দাস, নওগাঁ বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক ওছিম উদ্দিন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আতোয়ার রহমান, প্রথম আলোর নওগাঁ প্রতিনিধি ওমর ফারুক প্রমুখ। হাঁসের সঠিক পরিচর্যার নিয়মের বিষয়ে উপস্থিত সবার উদ্দেশে গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক রাজিত দাস বলেন, ‘হাঁস পালন করে মাংস ও ডিম উৎপাদনের মাধ্যমে আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। পাশাপাশি পরিবারে সচ্ছলতা আনা যেতে পারে। বন্ধুসভার বন্ধুরা যে হাঁস বিতরণ করল, তার সঠিক পরিচর্যা করে স্বাবলম্বী হতে পারবে। এই আটটি হাঁস পালনের মাধ্যমে একটি বড় খামারও তৈরি করা যায়, যা পরিবারের আর্থিক অনটন দূর করতে পারে। আশা করছি, তোমরা এর সঠিক মূল্যায়ন করবে।’হাঁসের বাচ্চা পেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী পূর্ণিমা রানী বলে, ‘হাঁসের বাচ্চা পাইলাম, ভালো লাগল। বাচ্চাগুলো অনেক সুন্দর, নরম তুলতুলে। লেখাপড়ার পাশাপাশি এগুলো আমি অনেক যত্ন করে পরিচর্যা করব। বাচ্চাগুলো বড় হয়ে ডিম দেবে। সেই ডিম ফুটিয়ে আরও বাচ্চা উৎপাদন করব। একটা বড় হাঁসের খামার করার ইচ্ছা আমার। হাঁস পালন করে লেখাপড়ার খরচ চালাতে চাই।’ বন্ধুরা বলেন, ‘পরিবারের আর্থিক সংকটে সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতি হলো মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য চাওয়া। হাঁস-মুরগি পালন করে পরিবারের বিপদে গ্রামের নারীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। পাশাপাশি নিজেদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে থাকে। এ উদ্দেশ্যেই বন্ধুরা অনুদান দিয়ে হাঁসের বাচ্চা উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। এই হাঁস পালন করে পরিবারগুলো নিজেরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি অন্য পরিবার গুলোকে পারিবারিক কর্মসংস্থান গড়তে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমরা আশা করি।’