মো: মোসলেম উদ্দিন সিরাজী
শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি
তারিখ: ০২/১২/২০২৪ ইং
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া স্টেশনে কর্মচারীদের বসবাসের জন্য তৈরি প্রতিটি ভবনেরই জরাজীর্ণ অবস্থা। ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ভেতরে ও বাইরে একাধিক স্থানে পলেস্তারা উঠে গেছে। বিভিন্ন স্থানে বিশাল ফাটল। দেয়ালের গায়ে পরগাছা জন্মেছে। দরজা-জানালা ভাঙ্গা। বসবাসের অনুপযোগী ফাঁকা ভবনে এখন মাদকসেবীদের আড্ডাখানা ও অনৈতিক কাজ চলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অযত্ন, অবহেলা ও নজরদারির অভাবে বেদখল হয়ে যাচ্ছে রেলওয়ের জমি ও অবকাঠামো। পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে। সন্ধ্যা হলেই এ পথে চলাচল করা যায় না। অবিলম্বে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ও বেহাত হয়ে যাওয়া সম্পদ উদ্ধারের আবেদন জানান তারা। এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান জানান, পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে স্থানীয়রা থানায় অভিযোগ দেয়নি। তবে মাঝেমধ্যেই পুলিশের টহল দল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকসেবীদের গ্রেপ্তার করে। জানা যায় , ব্রিটিশ আমলে উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের পাশে দেড় বিঘা জায়গার কিছু অংশে গড়ে উঠেছে রেলের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য কোয়ার্টার। বর্তমানে সেখানে ৯টি কক্ষ রয়েছে। এক সময় রেলের কর্মচারীরা এখানে বসবাস করতেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কর্মচারীদের মূল বেতনের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া হিসাবে কেটে নেওয়া শুরু হলে বিপাকে পড়েন কর্মচারীরা। কম বেতনভুক্ত হলেও বেশি টাকা দিয়ে কোয়ার্টারে বসবাস অসম্ভব হয়ে পড়ে তাদের জন্য। বাধ্য হয়ে তারা কোয়ার্টার ছেড়ে আশপাশের এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেন। দিনের পর দিন খালি পড়ে থাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে ভবনগুলো। যথাযথ নজরদারি ও সংস্কার না করায় বেশির ভাগ বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। এই সুযোগে মাদকসেবীরা এখানে আড্ডা বসায়। চলে অনৈতিক কাজও। তাদের অনেকেই এখানে বাসা বেঁধেছেন। বেশ কিছু জায়গা স্থানীয় প্রভাবশালীরা বেদখলে নিয়ে নিয়েছেন। রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের স্থানীয় ফিল্ড কানুনগো আবু বক্কার সিদ্দিক বলেন, উল্লাপাড়া স্টেশনের পরিত্যক্ত এসব সম্পদ সংস্কার ও দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিগগির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। এ বিষয়ে সহকারী স্টেশন মাস্টার আব্দুল বাতেন জানান, রেলের ভবনসহ সম্পদ বেদখলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে এ সমস্যা শুধু উল্লাপাড়া নয়, দেশের বেশির ভাগ স্টেশনেরই এ অবস্থা।এ প্রসঙ্গে পাকশী রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী বিরমল মণ্ডল জানান, কর্মচারীদের বেতনের ৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া কেটে রাখার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া রেলের সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করতে শিগগির অভিযান পরিচালনা করা হবে।