মোঃ আফতাবুল আলম
রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক সানশাইন পত্রিকার সম্পাদক তসিকুল ইসলাম বকুল ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার সময় রাজশাহী মহানগরীর মেহেরচন্ডি এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
এর আগে রবিবার (২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর ইসিবি চত্বর এলাকায় তার ছোট ছেলে শরিফ-উল-ইসলামের বাড়িতে এশার নামাজ শেষ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ইস্ট-ওয়স্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার সিটিস্ক্যান করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার মস্তিষ্কে ম্যাসিভ রক্তক্ষরণ হয়েছে। কোনভাবেই কোন কিছু করা সম্ভব নয় বলে চিকিৎসকরা পরিবারকে জানিয়ে দেন এবং বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। সোমবার দিবাগত রাতে তসিকুল ইসলাম বকুলকে ঢাকা থেকে এ্যাম্বুলেন্সযোগ ঢাকা থেকে রাজশাহী নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার সকালেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তসিকুল ইসলাম বকুলের পিতার নাম মাজহারুল ইসলাম ও মাতা উম্মেল খায়ের। তার জন্মভূমি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর এলাকার মিস্ত্রি পাড়ায়। স্কুল ও কলেজ জীবন চাঁপাইনবাবগঞ্জ কাটলেও তিনি অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ছোট থেকেই লেখালেখির প্রতি ঝোক ছিলো তসিকুল ইসলাম বকুলের। লেখপড়ার পাঠ চুকিয়ে তিনি সাংবাদিকতায় মনোনিবেশ করেন। বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর নিউজ বিভাগে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। একাধারে তিনি রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক বার্তা, দৈনিক সোনালী সংবাদ পত্রিকায় কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক সানশাইন পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাংবাদিকদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্য ছিলেন। ডেইলি নিউ নেশন, ইউএনবি’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। আরোও বেশকিছু সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেছেন। এসবের পাশাপাশি তিনি রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন
করেছেন। তার দুই ছেলে সরাফাতুল ইসলাম ও শরিফ উল ইসলাম, স্ত্রী শরিফা ইয়াসমিন, দুই নাতনি মরিয়াম আয়াত ও মরিয়াম আমায়াসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহী আছেন। মঙ্গলবার বাদ যোহর মেহেরচন্ডী মধ্যপাড়া কেন্দ্রিয় জামে মসজিদে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে চকপাড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগরিফাত কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া চাওয়া হয়েছে।