বীরগঞ্জ, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ইজারাদার মোশারফ কর্তৃক তৃতীয় লিঙ্গের সাথী আক্তারকে হুমকি ধামকি, নির্যাতন করায় মামলা এবং নিরাপত্তার জন্য সাধারণ ডায়েরি করেছে।
বীরগঞ্জ উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ হাট ইজারাদার নুরুল ইসলামের ছেলে মোশারফ হোসেনের স্ত্রী-সন্তান থাকা স্বত্ত্বেও স্থানীয় মহাদেবপুর এলাকার মনসুর আলীর মেয়ে তৃতীয় লিঙ্গ সাথী আক্তার কে ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী দ্বিতীয় বিবাহ করে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বিবাহের পর থেকে মোশারফ হোসেন সাথীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। যৌতুকের জন্য একের পর এক অত্যাচার ও মারধর করে। সংক্ষুব্ধ হয়ে তৃতীয় লঙ্গের সাথী আক্তার বাদী হয়ে মোশারফ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দিনাজপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন স্পেশাল ট্রাইবুনালে অভিযোগ দাখিল করলে, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, সংশোধিত ২০২০ সাল আইনের ১১(গ) তৎসহ ৪০৬/৪২০ ধারায় ৭৫৩/২০২৪ নম্বর মামলা হয় এবং চলমান আছে।
আরও জানা যায়, মোশারফ হোসেন মামলায় নিশ্চিত পরাজিত হবে বুঝতে পেরে, বাদিকে নানা প্রকার হুমকি ধামকি সহ ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দমন করার লক্ষ্যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। মোশারফ তার পিতার পুকুরে চাষকৃত বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সিংহভাগ মাছ তুলে বিক্রি করে দেয় অবশিষ্ট কিছু মাছ থাকতেই ৯ ডিসেম্বর’২৪ গভীর রাতে সকলের অজান্তে পুকুরে নিজেরাই গ্যাস বড়ি তথা বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন করে।
মাছ চুরির নাটক সাজিয়ে নিজেই পরেরদিন সকালে থানা পুলিশ ও সাংবাদিকদের খবর দিয়ে পুকুরে অর্ধ-মৃত্যু ভেসে থাকা মাছের ছবি ধারণ করা হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও মোশারফ হোসেন লিখিত অভিযোগ করেনি।
সাক্ষাৎকারে বলেন, তার প্রায় চার লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কেন থানায় লিখিত এজাহার করেন নি? এমন প্রশ্নের জবাবে মোশারফ জানান তিনি আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সাথী আক্তার গত ১১ ডিসেম্বর’২৪ নিরাপত্তার স্বার্থে এবং সকল ষড়যন্ত্র থেকে পরিত্রাণ পেতে বীরগঞ্জ থানায় ৫৭৯ নম্বর সাধারণ ডায়েরি করেছে। এসময় বলেন, তার উপার্জনের লাখ লাখ টাকা মোশারফ কে দিয়ে বিনিময়ে নির্যাতন ছাড়া কিছুই পাইনি। তার হিসেব মতে সাথী ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা মোশারফ কে দিয়েছে বলেও জানান।
একসঙ্গে দ্বৈত নামে ৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে নিজ খরচে বাড়ি নির্মাণ করে সাথী। সেখান থেকেও উচ্ছেদ করার হুমকি ও পায়তারা অব্যাহত রয়েছে।
অভিযুক্ত মোশারফের জানান, এক বিন্দু রক্ত থাকতে সাথীকে ছাড় দিবো না। তাকে নিঃস্ব করে ছাড়বো, আমার হাত অনেক বড়। ঢাকায় সাথীর গুরুমাকে অভিযোগ দিয়েছি। তাই কোর্ট-কাচারী তার কিছুই করতে পারবে না। তিনিও সাথীর বিরুদ্ধে পুরুষ নির্যাতনের মামলা করেছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ থানায় অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল গফুর বলেন সাথী নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছে বিষয়টি অবগত আছি এবং তদন্ত চলছে।