(বিশেষ প্রতিনিধি)
বিজয় দিবসে বাংলাদেশ এবার যেন মেতে উঠেছিল মহাউৎসবে। রাত বারোটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে আতশবাজি ফুটিয়ে, কামান দাগিয়ে, হুইসেল বাজিয়ে বরণ করা হয় বিজয় দিবসকে। পাড়ায় পাড়ায় মাইকে বেজে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের গান।
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থা নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পরিবেশিত হয় আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, পথনাটকসহ মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামের দিনগুলো নিয়ে নানা আলেখ্য ও বর্ণনামূলক অনুষ্ঠান। বেতার ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয় মুক্তিযুদ্ধের গান, নাটক ও কবিতা। ঢাকা শহরে নেমেছিল জনতার ঢল। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, রমনার বটমূল, টিএসসি, বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি ও আশপাশের এলাকা সব বয়সী মানুষের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে।
১৫ই ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে টিএসসিতে আতশবাজি পুড়িয়ে আর ৪৪টি ফানুস উড়িয়ে বিজয় দিবসকে স্বাগত জানানো হয়। তারপর কিছুক্ষণ চলে মনোমুগ্ধকর লেজার লাইট শো। এর পরপরই শুরু হয় দেশাত্মবোধক গান আর আবৃত্তি অনুষ্ঠান। পুরো এলাকা মেতে ওঠে বিজয় উৎসবে।
এবার বিজয় দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট অনেকগুলো মঞ্চ তৈরি করে। দেশের কৃতী সন্তানদের নামে নামকরণ করা হয় সেসব মঞ্চ। যেমন নরেন বিশ্বাস আবৃত্তি মঞ্চ, শওকত ওসমান নাট্যমঞ্চ ইত্যাদি। এসব মঞ্চে এক যোগে প্রচারিত হয় সংগীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি, চরমপত্র পাঠ, কবিকণ্ঠে কবিতা, বাউল গান ইত্যাদি।
বিজয় দিবসের ভোরবেলা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপ্রতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবর্গ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে একাত্তরের শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তারপর দলে দলে বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষ সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
বিকেল থেকে উৎসব হয়ে ওঠে আরও উৎসাহ ও আনন্দমুখর। সন্ধ্যার পর মনোরম আলোকমালায় সেজে ওঠে ঢাকা নগরী। মানুষজন মনের আনন্দে শহরজুড়ে ঘুরে বেড়ায়। বিজয়ের উৎসবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেয় গোটা জাতি।