দেবহাটা প্রতিনিধি: শামীম হোসেন
সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটার পারুলিয়া খলিশাখালিতে ভূমিহীন কামরুলের উপর হামলা ও হত্যায় সরাসরি জড়িত দেবহাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ সিরাজুল ইসলাম ও গোলাম ফারুক বাবুর নামে নিহতের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন বাদী হয়ে মামলা দায়েরের পর থেকে বাদী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। নিহতের ভাই সাইফুল সহ পরিবারের অপর সদস্যদের মামলার আসামি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ সিরাজুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবু কতৃক প্রাণনাশের হুমকি ও তাদের সশ্বস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিহত কামরুলের খলিশাখালী গ্রামে প্রায় সময় মহড়া দিচ্ছে । ভূমিহীন এলাকার সাধারণ মানুষেরা জানান, শেখ সিরাজুল ও গোলাম ফারুক বাবু ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করতে এবং উক্ত জমি দখলে নিতে হামলা চালায়, একইসাথে ভূমিহীনদের সাথে সক্ষতা রেখে তারা উচ্ছেদ হবেনা এমন নিশ্চয়তা দিয়ে হামলার পূর্বে কোটি টাকা আদায় করে । দেবহাটার এই দুই বিএনপি নেতার নামে অভিযোগের শেষ নেই, এই প্রতিবেদক সরজমিনে দেবহাটার বিভিন্ন এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে
শেখ সিরাজুল ইসলাম ও গোলাম ফারুক বাবু বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে দলীয় কর্মসূচিতে ছিল অনুপস্থিত । আওয়ামী লীগের দলীয় বিনা ভোটের এমপি রুহুল হকের সাথে যোগাযোগ রেখে উপজেলা বিএনপির দুই ডজন নেতাকর্মী সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০২২ সালে গোলাম ফারুক বাবু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করায় দলীয় কর্মীরা তার পক্ষে ভোট না করে নিরব থাকায়, তিনি সেই থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া শুরু করে। বিএনপি নেতাকর্মী বা সাধারণ ভোটারদের ভোট ছাড়াই তিনি আওয়ামীলীগ তালিকার প্রার্থী হিসাবে চেয়ারম্যান হয়। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের কে বহিষ্কার করা হলেও গোলাম ফারুক বাবুর বিরুদ্ধে দল কোন ব্যবস্থা নেয়নি। শেখ হাসিনার পতনের পর নোড়ার ভূমিহীন পল্লীর ৬০থেকে ৭০টি পরিবারের উপর হামলা সহ উক্ত ২১০ বিঘা জমির দখল করলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভূমিহীনরা রক্ষা পায়। দেবহাটার বিখ্যাত চোরাচালান সিন্ডিকেট জলিল, আলিম, আলফা ও রবির সাথে থেকে সরাসরি চোরাচালানের জড়িত এই দুই বিএনপি নেতার নাম মুখে মুখে । পতিত আওয়ামী সরকারের দেবহাটা আশাশুনি সহ সাতক্ষীরা সদরের কয়েক নেতা কর্মীকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে গোলাম ফারুক বাবু, এমন কথা প্রকাশে প্রচারে আছে । তথ্যানুন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ আমলে উপজেলা বিএনপির এই দুইনেতার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি বা কারাগারে যেতে হয়নি । সামগ্রিক বিষয়ে পৃথক পৃথকভাবে তাদের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলা ভূমিহীনরা দিয়েছে, বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে অনুপস্থিত ও মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নামে মামলা হয়েছিল । তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উক্ত মামলা সড়ক দুর্ঘটনাজনিত কারনে । চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবুর কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করায় আওয়ামী লীগ এমপি রুহুল হক সহ আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে চলাফেরা করতেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলের সব সিদ্ধান্ত মানতে হবে এমন নয় ।