মোঃ মোজাম্মেল হক জামালপুর জেলা প্রতিনিধি
১২/১/২৫
জামালপুর জেলা মাদারগঞ্জ উপজেলায় নারীর সমাবেশের আয়োজন করা হয় সেই সমাবেশে প্রতিটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয় নারীকর্মীদের সমাবেশে নিয়ে আসার জন্য তাই মাদারগঞ্জ উপজেলার আদার ভিটা ইউনিয়নের বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মুক্তা,
তিনি নয়টি ওয়ার্ডের মহিলাদের ভুড়ি ভোজের আয়োজন করেন তাও আবার গরু চুরি করে এমন ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে যে গত শুক্রবারে রাতে উপজেলার জোর খালি ইউনিয়নের দক্ষিন খামার মাগুর এলাকার কৃষক এফাজ উদ্দিন মন্ডলের গোয়াল ঘর থেকে রাতের অন্ধকারে গরু চুরি করে । পরদিন সকালে ওই কৃষক গরু খোঁজাখুঁজি করতে, করতে একপর্যায়ে কয়রা বাজারে বজলু কসাই এর দোকানে গরুর মাথা ও চামড়া দেখে সনাক্ত করেন যে এটি এফাজ উদ্দিনের গরু। পরে মাংস ব্যবসায়ী বজলু স্থানীয় লোকজনকে জানান, বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান ও যুবদল কর্মী সুমন মন্ডল তাঁকে ওই গরুর মাংস কাটতে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে উত্তেজিত স্থানীয় লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই নেতার বাড়িতে যান। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে লোকজন পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যুবদল কর্মী সুমন ও মাংস ব্যবসায়ী বজলুকে আটক করে। এ সময় গরুর চামড়া, মাথা ও কিছু মাংস জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় গরুর মালিক এফাজ মন্ডল বাদী হয়ে আজ বিকেলে মাদারগঞ্জ থানায় মাহমুদুল হাসানসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সুমন মণ্ডল ও বজলুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলা বিএনপি মাহমুদুল হাসানকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মঞ্জুর কাদের বাবুল খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, দলের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্নের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাহমুদুল হাসানকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হলো। একই সঙ্গে তাঁকে কেন দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সেটি আগামী সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিএনপি নেতা মঞ্জুর কাদের মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় আপাতত তাঁকে সাময়িকভাবে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দলের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হবে। তদন্তে তাঁর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে স্থায়ীভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাহমুদুল হাসান এর কাছেজানতে চাইলে বলেন, আজ উপজেলায় মহিলা দলের কর্মী সমাবেশ ছিল। সমাবেশে তাঁর ইউনিয়ন থেকে নারীদের নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ জন্য ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড থেকে নারীদের নিয়ে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেন। তিনি মাংস ব্যবসায়ী বজলুর কাছ থেকে ৭৬ কেজি মাংস কিনেছিলেন। তিনি কোথা থেকে গরুটি এনেছেন, বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তাঁর বাড়িতেই বজলুর আনা গরুটি জবাই করা হয়। তিনি ৭৬ কেজি মাংস মেপে বাকিগুলো নিয়ে যান। রাতে রান্না হচ্ছিল। তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে লোকজন তাঁর বাড়িতে এসে জানান, গরুটি চুরি করে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি তো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাংস কিনেছি। তিনি কোথা থেকে গরু আনছেন, আমি জানি না।’
মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, অব্যাহতি পাওয়া বিএনপি নেতা চুরি করা গরু দিয়ে খাবারের আয়োজন করেন। ওই খাবার তাঁর লোকজনের খাওয়ার কথা ছিল। খবর পেয়ে নেতার বাড়ি থেকে হাতেনাতে দুজনকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে গরুর মাথা, চামড়া ও কিছু মাংসও জব্দ করা ওই মামলায় আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।