হাসান আহমেদ প্রান্ত নারায়ণগঞ্জ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা দ্বীন ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিস্তিনের মজলুম জনতার পক্ষে লড়াই করার জন্য যোদ্ধাদের তালিকা করতে হবে। তালিকা তৈরি করে তাদেরকে বিশ্বসন্ত্রাসী ইহুদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রেরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে সরকার আন্তরিক না হলে জনতা স্পষ্ট ধরে নেবে এ সরকার উপরে ফিলিস্তিনের জন্য মায়াকান্না করে ভেতরে ভেতরে ইসরায়েলের পক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করছে। সরকার ফিলিস্তিনের পক্ষে আছে এটা দেখানোর জন্য ছাত্রলীগকে মাঠে নামিয়েছে, অপরদিকে পাসপোর্ট থেকে একসেপ্ট ইসরাইল তুলে দিয়ে ইসরাইলের সাথে তলে তলে সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
আজ ১৭ মে শুক্রবার বিকাল ৪টায় ডিআইটি চত্বরে ইসরাইয়রী গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। নগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের সহ-সভাপতি যথাক্রমে মাও. শফিকুল ইসলাম ও নুর হোসেন, সেক্রেটারি যথাক্রমে জাহাঙ্গীর কবির ও সুলতান মাহমুদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি যথাক্রমে মুহা. আমান উল্লাহ ও ডা. সাইফুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের সভাপতি মুহা. ওমর ফারুক ও মাওলানা হাবীবুল্লাহ হাবিব।
প্রচন্ড তাবদাহ উপেক্ষা করে ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঈমানদার জনতা রাজপথে ইসরাইল বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগানে ফেটে পড়েন।
মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। বর্বর ইসরাইল চাপিয়ে দেওয়া একটি জারজ রাষ্ট্র। ইসরাইলি পণ্য বয়কট নয়, আমদানি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের বাজারে ইসরায়েল ও তাদের দোসর ভারতের পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, দখলদার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাঈল শুধু আজকেই নয় বরং তারা ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপরে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে আসছে। এই হামলায় কয়েক লক্ষ মানুষকে তারা শহীদ করেছে। বিশেষ করে বিগত ৭ মাসে ইসরাঈল ফিলিস্তিনের গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে তা অকল্পনীয়। এই ক’মাসেই প্রায় চল্লিশ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু, যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা।
শ্রমিক নেতা হাবিবুল্লাহ হাবিব বলেন, ইসরায়েলের বর্বর হামলায় স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জাসহ কোন স্থাপনায় বাদ যাচ্ছেনা। এই গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। একইসাথে অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলী এই বর্বর হামলা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি জাতিসংঘ, আন্তজার্তিক সংস্থা এবং মুসলিমবিশ্বের মোড়লদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
জেলা সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের গোলামি করছে। সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশের নিরীহ আদম সন্তান হত্যা করছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদটুকু করারও সাহস করছে না। তিনি বলেন, উগ্রবাদি হিন্দুরা ফরিদপুরের মধুখালিতে দুই সহোদর ভারইকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করার দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো খুনিরা ধরাছোয়ার বাইরে। অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে ব্যর্থ হলে শীঘ্রই ফরিদপুরে বিশাল গণসমাবেশের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
নগর সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতার লোভে সন্ত্রাসী ইসরাইলকে বন্ধু বানাতেও কুন্ঠাবোধ করছে না। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইসলাম ও মুসলমানদের চিরশত্রু ইহুদিদের সাথে গোপনে আতাত করে চলছে। আমরা মানবতার পক্ষে, মজলুমের পক্ষে, জালেমের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, বিশেষ করে আমাদের নারায়ণগঞ্জের সকল হোটেল রেস্টুরেন্টে ইসরাইলী কোমল পানীয় বর্জন করতে হবে।
উল্লেখ্য, আজ আন্দোলনের মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় দফরত সম্পাদক উপস্থিত থাকার কথা থাকলে আজ বাদ জুমআ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।
সমাবেশে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।