1. Jahidksb@gmail.com : Jahid Hasan : Jahid Hasan
বিয়ের নামে মোটা অংকের অর্থ আদায় করাই যার পেশা - খবর সকাল বিকাল - Khobor Sokal Bikal    
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নওগাঁয় প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া অসহায় গরীব ১৬০ জন কম্বল পেয়ে মুখে হাসি নরসিংদীর সাবেক এমপি পোটনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত পাইকগাছায় জামায়াতের ইসলামীর আমীরে ডাঃ শফিকুর রহমানের আগমন উপলক্ষে র‍্যালি ও পথসভা বরিশালের বিভিন্ন জেলা উপজেলা লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ গাজীপুর জেলা পেশাজীবী সাংবাদিক পরিষদের আত্মপ্রকাশ লালপুরে গ্রীন ভয়েসের কমিটি গঠন, সভাপতি সজিবুল- সম্পাদক আল আমিন কাঠালিয়ায় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের সংবাদ সম্মেলন মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি ময়মনসিংহে বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

বিয়ের নামে মোটা অংকের অর্থ আদায় করাই যার পেশা

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

সাদ্দাম উদ্দিন রাজ নরসিংদী জেলা

মুসলিম বিবাহের শরিয়া মোতাবেক বিবাহের পর বাসর রাতে স্বামী তার স্ত্রীকে দেনমোহর পরিশোধ করে দেওয়া উত্তম। দেনমোহর দ্রুত পরিশোধ করা প্রত্যেক স্বামীর জন্য ফরজ। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই দেনমোহরকে পুজি করেই কিছু নারীর জন্য পুরুষ জাতি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। এখন চলছে দেনমোহর ফ্যাশন বা প্রতারণার মাধ্যমে আদায় করা চলছে মহাসগৌরবে। প্রেমের বিয়ে, ইয়ে করে বিয়ে, পরিবারের পছন্দের বিয়ে, ঘটকের কল্যাণে বিয়ে কিংবা স্বামী পরিত্যক্ত বিয়ে যা-ই হোক না কেন, দেনমোহর সর্বনিম্ন দুই লক্ষ টাকা হতে হবে। এ দেনমোহরকে পুৃঁজি করে কিছু অসত্য মহিলা পুরুষ জাতিকে বিভ্রান্ত কর অবস্থায় ফেলছে। এমনই ঘটনা ঘটেছে নরসিংদী সদর উপজেলার ছোট মাধবদী এলাকায়। নিজের সৌন্দর্যতাকে পুঁজি বানিয়ে একাধিক বিয়ে করে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। সে সদর উপজেলা ছোট মাধবদী গ্রামের মৃত আব্দুল হকের মেয়ে। বিয়ের পর শুধু মাত্র নির্ধারিত দেনমোহর নয় চার-পাঁচ গুণ বেশি অর্থ আদায় করতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করেন সোনিয়া নামে ওই নারী। বিয়ের প্রথম বছরেই সন্তানের মা হয়ে যান। সন্তান প্রসবের পর পরই নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে কৌশল অবলম্বন শুরু করেন। তার এসব কাজে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন, তার মা এলাকায় চিহ্নিত সুদি ব্যবসায়ী জরিনা বেগম,তার ভাই মাধবদী পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচনে পরাজিত বিএনপি নেতা রোমান, কসাই রুহুল আমিন।
তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ২০১০ সালে পারিবারিক ভাবে নরসিংদীর পাশ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার আতলাপুর গ্রামের গুল বক্সের ছেলে রিপন বক্সের সাথে বিয়ে হয় আব্দুল হকের মেয়ে সোনিয়ার। বিয়ের এক বছর পর তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান জন্মের পরই সোনিয়ার আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। সোনিয়া নিজের বাড়িতে মায়ের কাছে বেড়াতে এসে বায়না ধরে, শ্বশুর বাড়ি যাবেনা। মাসে মাসে তার ও মেয়ের খরচের জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে হবে। সোনিয়া তার মা ও ভাইদের সাথে থাকবে। স্বামী রিপন বক্স রাজী হয়নি। সোনিয়া কৌশলে রিপন বক্সকে দাওয়াত দিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। রিপন বক্স শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসলে, সোনিয়া এবং তার মা ও ভাইয়েরা মিলে চাপ প্রয়োগ করেন, সোনিয়াকে বাপের বাড়িতে রাখতে হবে এবং মাসে মাসে খরচের জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে হবে। রিপন বক্স রাজী না হওয়ায়, সোনিয়ার ভাই কসাই রুহুল আমিন পরিকল্পিতভাবে আরো লোকজন নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে মারধোর করেন। এসময় গরু জবাই করার ছুরি দিয়ে জবাই করে লাশ গুমের হুমকিও প্রদান করেন। এরপরেও তাদের কথায় রাজী না হওয়ায় অন্যের পরামর্শে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠান রিপন বক্সকে। কিছু দিন জেল খেটে টাকার বিনিময়ে আপোষ মীমাংসা করে তালাক প্রদান করেন সোনিয়াকে। এক বছরের কম বয়সী দুধের শিশুকে রিপন বক্সের কাছে দিয়ে দেন সোনিয়া। পরে সোনিয়া প্রথম বিয়ে ও সন্তানের কথা গোপন রেখে, ২ লক্ষ বিশ হাজার টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে ২০১৭ সালে বিয়ে করেন নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার মাতাইন গ্রামের আলম চাঁনের ছেলে রবিউলের সাথে। বর্তমানে সে ভিয়েতনাম প্রবাসী। ওই সময় দেনমোহর পরিশোধ করেন বিশ হাজার টাকা। বিয়ের এক বছর পর তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। সন্তান জন্মের পরই সোনিয়া মাধবদীতে তার মা ও ভাইদের সাথে থাকার বায়না ধরেন। রবিউল যেহেতু দেশে থাকেন না, তাই সোনিয়াকে কোন বাধা প্রদান করেন নি। স্ত্রী ও সন্তানের খরচের জন্য প্রতি মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা পাঠান স্বামী। রবিউলের বাবা মা প্রতি মাসে মাধবদী এসে ছেলের বউ ও নাতীকে দেখে খরচের টাকা দিয়ে যান। ভালোই চলছিলো তাদের সংসার। সোনিয়া ও মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা পেয়ে বেশ খুশি। সমস্যা হয় গত বছর রবিউল যখন ছুটিতে দেশে আসেন। দেশে এসে রবিউল জানতে পারেন, সোনিয়াকে মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা দেওয়ার পরও তার সন্তানকে বাসায় একা রেখে মাধবদী শহরে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরির নামে বেহায়াপনা ভাবে চলাফেরা করে। তখন রবিউল সোনিয়াকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে চায়। সোনিয়া ও তার মা রাজি হয়না। রবিউল স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনদের সহায়তায় অনেক চেষ্টা করেও সোনিয়াকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়। সোনিয়া মাধবদীতে থাকলে মাসে মাসে আর কোন টাকা দেওয়া হবেনা বলে জানান রবিউল। এসময় সোনিয়া ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে রবিউলের সাথে সংসার করবেনা বলে জানায়। বিনিময়ে ১০ লক্ষ টাকা দাবী করেন, অন্যথায় মামলা দিয়ে জেল খাটানোর হুমকি প্রদান করেন। রবিউল দেনমোহরের ২ লক্ষ টাকা দিতে রাজী হলেও অতিরিক্ত কোন টাকা দিতে রাজী নয় বলে জানান। এক দিকে ছুটির সময় শেষ অপরদিকে সোনিয়া সংসার করতে রাজী না হওয়ায় রবিউল নোটারী পাবলিক করে সোনিয়াকে তালাক প্রদান করে ভিয়েতনাম ফিরে যান। এদিকে সোনিয়া অন্যদের সহযোগিতায় নরসিংদীর আদালতে রবিউল ও তার বাবা মাকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রবিউলের অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা মা আটক হয়ে হাজত বাস করেন।
সোনিয়ার বিষয়ে তার প্রথম স্বামী রিপন বক্স বলেন, বিয়ের পর আমাদের সংসার ভালো চলছিলো কিন্তু আমাদের সন্তান হওয়ার পর থেকেই তার স্বভাব পাল্টে যায়। সে আমাক চাপ দিতে থাকে, তাকে মাসে মাসে খরচের টাকা দিতে সে মাধবদীতে তার মায়ের সঙ্গে বসবাস করবে। আমি রাজি হয়নি। আমি যখন সোনিয়াকে বললাম, আমি বিয়ে করেছি আমার বা মায়ের সেবা যত্ন করার জন্য, আমার টাকায় মাধবদী থেকে আমোদ ফুর্তি করার জন্য নয়। এরপর আমাকে আমার শ্বশুর বাড়ি ডেকে নিয়ে, পরিকল্পিতভাবে যেভাবে মারধোর করেছে, সেই মাইরের কথা মনে হলে এখনো আমি আঁতকে উঠি। শুধু মেরেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি,আমাকে জেল ও খাটিয়েছে। পরে ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংসা করে আমি সোনিয়ার কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমার মেয়ে এখন ক্লাস সিক্সে পড়ে। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে সেই লোমহর্ষক ঘটনা ভুলে যেতে চাই।
সোনিয়ার দ্বিতীয় স্বামী রবিউল জানান, সোনিয়া ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের কাছে তার পূর্বের বিয়ে ও সন্তানের কথা গোপন রেখে প্রতারণা করে আমাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর যখন জানতে পারি তার আগেও একটি বিয়ে হয়েছিলো এবং সেখানে তার একটি সন্তানও আছে। তখন আমি ও আমার পরিবারের লোকজন দূর্ভাগ্য ভেবে মেনে নেই। বিয়ের বছর খানেক পরে আমি ভিয়েতনাম চলে আসি। আমাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। ছেলেকে নিয়ে সোনিয়া মাধবদীতে তার মায়ের সঙ্গে বসবাস করতে বায়না ধরে। আমিও ভাবলাম যেহেতু আমি প্রবাসে থাকি,সেহেতু সে মাধবদীতে থাকলে কোন সমস্যা নাই। সেই থেকে আমি সোনিয়ার বায়না রক্ষা করতে,স্ত্রী সন্তানের খরচ বাবদ প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে আসছি। এবার ছুটি পেয়ে দেশে এসে জানতে পারি, আমি টাকা দেওয়ার পরও আমার ছেলেকে একা ফেলে সে চাকরীর নামে বেহায়াপনা করছে। তখন আমি ও আমার পরিবারের লোকজন জনপ্রতিনিধিসহ একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে আমাদের বাড়িতে আনতে পারিনি। বাধ্য হয়ে আমি তখন বলি, আর মাসে মাসে খরচের টাকা দিবোনা। তখন সোনিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের আঁতে ঘা লাগে। সোনিয়া আমার সংসার করবেনা বলে ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে ডিভোর্স চায়। নইলে আমাকে চৌদ্দ শিকের ভাত খাওয়াবে বলে হুমকি দেয়। দেনমোহর বাবদ দুই লক্ষ টাকা পাবে, ১০ লক্ষ টাকা দিবো কেন? জানতে চাইলে, সেটা সময় হলেই বুঝতে পারবো বলে সোনিয়া জানায়। আমার ছুটির সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি নোটারী পাবলিক করে সোনিয়াকে তালাক প্রদান করে ভিয়েতনাম ফিরে আসি। পরে সোনিয়া আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করে,আমার অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা মাকে পুলিশের মাধ্যমে আটক করে হাজত বাস করান। আদালতের মাধ্যমে আমার বাবা মা জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
রবিউল আরো বলেন, আমরা প্রবাসীরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা। দেশের রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য পরিবারের লোকজনকে ফেলে এতো দূরদূরান্ত এসে শরীরের রক্ত পানি করে টাকা উপার্জন করছি। আর সেই টাকা সোনিয়ার মতো মেয়েরা আমোদ ফুর্তি করে লুটবে, সেটাকি মেনে নেয়া যায়?
এ বিষয়ে সোনিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য নেয়ার জন্য সোনিয়ার মুঠোফোনে ফোন দিলে, সোনিয়া বলেন ৫ মিনিট পরে ফোন দেন আমি বাসার বাইরে আছি,বাসায় গিয়ে কথা বলবো। ৫ মিনিট পর এই প্রতিনিধির মুঠোফোনে ফোন দিয়ে নিজেকে একজন আইনজীবী পরিচয়ে, প্রতিনিধির পরিচয় জানতে চান। প্রতিনিধি নিজে পরিচয় প্রদানের পর, আইনজীবী বলেন, আপনি সোনিয়া নামের মেয়েকে ডিসর্টাব করেন কেন? সোনিয়া কোন বক্তব্য দিবেনা বলে জানান। পরে তার বক্তব্য নেওয়া আর সম্ভব হয়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ২০২৪  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি