মোঃ মোবারক হোসেন নাদিম
বিশেষ প্রতিনিধি,
২৬ শে জুন ২০২৪’ইং বুধবার নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা প্রতিনিধি দৈনিক দেশ প্রতিদিন ।নরসিংদীর মনোহরদীতে সাগরদী বাইপাস নতুন রাস্তায় বিকেল হলে বসে তরুণ যুবকদের মাদক কেনাবেচা ও সেবন। এতে করে ধ্বংস হচ্ছে এলাকার যুব সমাজ। নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।ভয় পাচ্ছে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা সাধারণ মানুষ। তরুণ যুবকেরা নেশায় আসক্ত হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। নেশার টাকা যোগাড় করতে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত পড়তেছে।এতে করে নষ্ট হচ্ছে সামাজিক পরিবেশ অবনতি হলে দেশের আইনশৃঙ্খলা।তারা ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনের মাধ্যমেই সাধারণত মাদক জগতে পা বাড়ায়। একপর্যায়ে মাদক তাদের গ্রাস করে নেয়।
ইউএনডিপির দেওয়া এক তথ্যে জানা যায়, পৃথিবীতে মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধির হার ২ শতাংশ। সমাজ-গবেষকদের মতে, বাংলাদেশে এ হার আরো বেশি হবে।
বলাবাহুল্য, ডাকাতি, খুন, ছিনতাইসহ দেশে প্রতিনিয়ত যেসব অপরাধ ঘটে চলছে সেসবের একটি বড় অংশের পেছনেই রয়েছে মাদক। বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, মাদকসেবনকারীদের প্রায় ৮৫ শতাংশের বয়স ১৩ থেকে ২৯ বছর। তাদের একটি বিশাল অংশই মাদকদ্রব্য কেনার জন্য টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সুনাগরিক তৈরির পথেও এই মাদক বাধার সৃষ্টি করছে। মাদকাসক্তদের বাঁচাতে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশে ইয়াবার বিস্তার রোধ করতে হলে মাদক পাচারের রুটগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনে নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করে বড় ধরনের একটি অভিযান চালানো জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশের অভ্যন্তরে যারা মাদক বিক্রি করছে তাদেরও কঠোরভাবে দমন করতে হবে। একই সঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবক, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সমাজের সর্বস্তরে মাদকবিরোধী অবস্থানকে শক্তিশালী করতে হবে। নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। অল্প বয়সী কিংবা তরুণ-তরুণীদের এমন ভয়াবহ মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বস্তরের লোকজনের সমন্বয়ে এ ব্যাপারে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়তে হবে। মনে রাখতে হবে, মাদকমুক্ত দেশ গড়তে না পারলে সুস্থ সমাজ গঠন কঠিন হবে।দেশের আনাচে-কানাচে পৌঁছে গেছে মরণনেশা ইয়াবাসহ নানা মাদক। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ। তবে বেসরকারি নানা গবেষণা সংস্থার মতে, দেশে ৫৫ লাখেরও বেশি মাদকাসক্ত রয়েছে। মাদকসেবীদের পাল্লায় পড়ে আজকাল শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের সন্তানরাও বিপথগামী হচ্ছে।মাদকাসক্তি এক ভয়াবহ মরণব্যাধি। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যে সকল সমস্যা বিদ্যমান তার একটি অন্যতম সমস্যা হচ্ছে মাদকের ভয়াল থাবা। দিন দিন মাদকের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। নিষিদ্ধ জগতে অস্ত্রের পর মাদকই সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা। বর্তমানে দেশের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে মাদকের কেনাবেচা হয় না। শহর থেকে শুরু করে গ্রামেও এটি সহজলভ্য। এলাকার বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা এখন রাতে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে অনেক ভয় পায় মাদকসেবীদের জন্য।
আমাদের দেশে প্রচলিত মাদকদ্রব্যের মধ্যে ইয়াবা, গাজা, ফেনসিডিল, মদ, আফিম, হেরোইন, কোকেন, প্যাথেডিন, বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ওষুধ, এমনকি জুতার আঠাও রয়েছে। এসব ভয়ানক নেশা জাতীয় দ্রব্য সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে গেছে। এসব মাদকের বেশির ভাগই আসে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার হতে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে। মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ মাদকের বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এশিয়ার গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল, গোল্ডেন ক্রিসেন্ট ও গোল্ডেন ওয়েজ নামে পরিচিত মাদক । আমাদের দেশের মধ্যে মাদক একটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সামাজিক ভাবে এর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।তা না হলে দেশের যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে।