আব্দুস সামাদ লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের রাজপুরে একের পর এক অন্যায়, শোষণ ও অত্যাচার ঘটে চলছে। তা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম মূল ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ এলাকায় দুঃস্কৃতিকারী ও দস্যুরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে!
লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ের কিশামত চিনাতুলী বাজার এলাকার ‘স’মিল ও কাঠ ব্যবসায়ীর নিকট ২লক্ষ টাকা চাঁদার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, একই এলাকার দুঃস্কৃতিকারী ও দস্যু প্রকৃতির বলে পরিচিত মোঃ রফিকুল ইসলামসহ সংঘবদ্ধ ও অপরাধী ব্যক্তিগণ এর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, রোববার (৩০ জুন) লালমনিরহাট সদর থানায় লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের সরঞ্জমী খলাইঘাট এলাকার মৃত- সেকেন্দার আলীর পুত্র মোঃ ইউনুছ আলী (৫৫) নামের কিশামত চিনাতুলী বাজার এলাকার ‘স’মিল ও কাঠ ব্যবসায়ী এ অভিযোগ দাখিল করেছেন।
‘স’মিল ও কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ ইউনুছ আলী স্বাক্ষরিত অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের স্থানীয় কিশামত চিনাতুলী বাজারে আমার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিতে ‘স’ মিল দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ‘স’ মিলের ও কাঠের ব্যবসা করে আসছি। উক্ত ‘স’ মিলের আশপাশে প্রায় ১০/১২ লক্ষ টাকার গাছের গোলাই পড়িয়া থাকে। এ অবস্থায় এলাকার দুঃস্কৃতিকারী ও দস্যু প্রকৃতির বলিয়া পরিচিত আসামী লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের সরঞ্জমী খলাইঘাট এলাকার মৃত- আনছার আলীর পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম (৫৫), কিশামত চিনাতুলী এলাকার মৃত- বছর ঝেল্লার পুত্র মোঃ নূর জামাল (৫৪), মোঃ নূর জামালের পুত্র মোঃ আসরা মিয়া (২২), মৃত- রমজান আলীর পুত্র মোঃ ইসমাইল হোসেন (৫৫), মোঃ ইসমাইল হোসেনের পুত্র মোঃ মমিন (৩০), মোঃ এসুফ আলী (২৫), মোঃ বক্করগং একই সংঘবদ্ধ ও অপরাধী ব্যক্তি। আমি উক্ত ‘স’ মিলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি নিষ্ঠা ও সততার সহিত পরিচালনা করাকালীন উল্লেখিত আসামীগণ আমার ব্যবসার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রায় সময় আমার ‘স’ মিলে এসে আসামী রফিকুল ইসলাম অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় আমাকে উচ্চস্বরে হুমকি দিয়ে বলে, ‘তুই দুই মাইল দূর হতে এসে এখানে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করছিস তাই তোকে আমাদেরকে ২লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে, আমাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিলে তোর ‘স’ মিল ও অন্যান্য মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যাবো’ বলে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। এরপর রোববার (৩০ জুন) সকাল ১১টা ৩০মিনিটে আমি উক্ত ‘স’ মিলে থাকিয়া দেখাশুনা করাকালীন সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী উল্লেখিত সকল আসামীগণ ও অজ্ঞাতনামা ৫/৭জন বাঁশের লাঠি, লোহার রড, পাট কাটা লোহার ধারালো বেকি ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে একই উদ্দেশে আমার ‘স’ মিলে অনাধিকারভাবে প্রবেশ পূর্বক আসামী রফিকুল ইসলাম অন্যান্য আসামীগণ লাঠি, রড, ধারালো বেকি উপরে উঠিয়া আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, এখনই আমাদেরকে চাঁদার ২লক্ষ টাকা দিতে হবে তা না হলে তোমাকে মারপিট করে জীবনের তরে ‘স’ মিলের ব্যবসা করার স্বাদ মিঠিয়ে দিয়ে ‘স’ মিল ও গাছের গোলাই গুলি লুটপাট করে নিয়ে যাবো। তখন আমি আসামীদের কথায় রাজী না হলে ১নং আসামীর হুকুমে অন্যান্য আসামীগণ ধারালো বেকি, লোহার রড, লাঠি ইত্যাদি উপরে উঠিয়ে আমাকে মারপিট করার জন্য ধাওয়া করে আমি প্রাণের ভয়ে ‘স’ মিলের পার্শ্বে রাজপুর ইউনিয়নের কিশামত চিনাতুলী এলাকার মৃত- পশর মামুদের পুত্র মোঃ মজিদ মিয়া এর বাড়িতে ঢুকে নিজেকে আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করি এবং মোবাইল ফোনে ৯৯৯ লাইনে যোগাযোগ করে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের সহায়তা চাইলে সদর থানার কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার ঘটনাস্থলে গ্রাম চকিদার মোঃ আজিজুল হককে পাঠিয়ে দিলে ও আশপাশ লোকজন সাক্ষী কিশামত চিনাতুলী এলাকার মোঃ হায়দার আলীর পুত্র মোঃ আজিজুল হক, মৃত- আনেছ আলীমের পুত্র মোঃ আলম, মৃত- সাহাদ আলীর পুত্র মোঃ সামছুল হক, মৃত- হারেছ আলীর পুত্র মোঃ মনির হোসেন, মৃত: নছর উদ্দিনের পুত্র মোঃ বক্করসহ আরও অনেকে ঘটনাস্থলে আসিলে আসামীগণ সকলেই আমাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে ‘স’ মিল হতে চলে যায়। অতঃপর এ অভিযোগ দাখিল করেছি।
‘স’মিল ও কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ ইউনুছ আলী বলেন, আমার অভিযোগের বর্নিত বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও আসামীগণের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, মোঃ রফিকুল ইসলামগং এর এমন কর্মকাণ্ডে স্থানীয়দের মাঝে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার দাবি করেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য যে, অভিযোগের বিষয়টি লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ আমলে নিয়েছে মর্মে জানা গেছে।
অপরদিকে, সোমবার (১ জুলাই) লালমনিরহাট সদর থানায় রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার ২নং হারাগাছ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পল্লীমারী এলাকার মৃত- সেকেন্দার আলীর পুত্র মোঃ আব্দুল হক (৬২) নামের এক ভুক্তভোগী এ অভিযোগ দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ রফিকুল ইসলামের বক্তব্য জানা যায়নি।
উক্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লালমনিরহাট সদর থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরী ও অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে “রক্তাক্ত রাজপুর (ভূমি জবর দখলের একটি প্রামাণ্য দলিল)” নামক একটি গ্রন্থ শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়।