খরিপ-২ মৌসুমে চিচিঙ্গা চাষে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

 

মোঃ নাঈম উদ্দীন
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি
দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা।

“টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের” আওতায় খরিপ-২ মৌসুমে চিচিঙ্গা (জাত: মধুমতি) চাষের আধুনিক পদ্ধতি ও সফলতা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় এক কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গার আয়োজনে ১৬/১০/২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখে বাঘাডাঙ্গায় এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।

মাঠ দিবসের মূল উদ্দেশ্য ছিল
‘যশোর অঞ্চলের টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের’ মাধ্যমে বাস্তবায়িত চিচিঙ্গা ফসলের প্রদর্শনী প্লটের আশাব্যঞ্জক ফলন সরাসরি কৃষকদের দেখানো এবং উন্নত জাত ও আধুনিক চাষাবাদ কৌশল সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আলমগীর বিশ্বাস, অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যশোর অঞ্চল, যশোর। তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “চিচিঙ্গা একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় সবজি। মধুমতি জাতের এই চিচিঙ্গা ফলন ভালো দেয় এবং বাজারে এর চাহিদা রয়েছে।

প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের উন্নত বীজ, সার ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে যাতে তারা চিচিঙ্গা চাষে লাভবান হতে পারেন। বর্তমান সরকার কৃষকদের পাশে আছে এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, টেকসই কৃষির জন্য জলবায়ু সহনশীল জাত এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি গ্রহণ করা অপরিহার্য।

মাঠ দিবস ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব মোঃ মাসুদুর রহমান সরকার, উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, চুয়াডাঙ্গা।

তিনি তার বক্তব্যে চিচিঙ্গা চাষে উন্নত প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “দামুড়হুদার মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। কৃষকরা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্যা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, তবে চিচিঙ্গা চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

বিশেষ করে মাচা তৈরি, সুষম সার ব্যবহার এবং রোগ-পোকা দমনে বালাইনাশকের সঠিক প্রয়োগ ফলন বহুলাংশে বৃদ্ধি করবে।” তিনি উপস্থিত কৃষকদের যেকোনো সমস্যায় কৃষি অফিসের সহায়তা নেওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মোছাঃ শারমিন আক্তার, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, দামুড়হুদা। তিনি প্রকল্পের কার্যক্রম এবং বাঘাডাঙ্গার প্রদর্শনী প্লটের ফলন ও কৃষকের অভিজ্ঞতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

তিনি জানান, “মধুমতি চিচিঙ্গা জাতটি স্থানীয় জাতের চেয়ে অনেক বেশি ফলনশীল এবং কৃষকরা এর থেকে ভালো দাম পাচ্ছেন। এই সাফল্য দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও এই জাতের চিচিঙ্গা চাষে আগ্রহী হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।”

এসময় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মচারী বৃন্দ এবং এলাকার কৃষি অভিজ্ঞ চাষীরা উপস্থিত ছিলেন। কৃষকরা চিচিঙ্গা প্রদর্শনী প্লট ঘুরে দেখেন এবং তাদের চাষাবাদের অভিজ্ঞতা ও সমস্যা নিয়ে অতিথিদের সাথে সরাসরি আলোচনা করেন।

আলোচনা শেষে প্রকল্পের সফল কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা বিতরণ করা হয়। মাঠ দিবসটি সফলভাবে আয়োজন করায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসকে ধন্যবাদ জানান উপস্থিত সবাই।

শেয়ার করুনঃ