মোঃ নাঈম উদ্দীন
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি
দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা।
প্রতি বছরের মতো এবারও ১০ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হলো বিশ্ব ডিম দিবস (World Egg Day)। দিবসটি উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং প্রাণিসম্পদ বিভাগ, চুয়াডাঙ্গা-এর আয়োজনে এক বিস্তারিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ডিমের পুষ্টিগুণ ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরে এই বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই গুরুত্বপূর্ণ সভাটি শুরু হয়। এতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মীরা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), জনাব আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম। তাঁর বক্তব্যে তিনি ডিমকে ‘প্রকৃতির সম্পূর্ণ খাবার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “ডিম শুধুমাত্র একটি সহজলভ্য খাদ্য উৎস নয়, বরং এটি মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সবকটি পুষ্টি উপাদানের ভান্ডার। বিশেষত শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশে ডিমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত— পুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম রাখা।” তিনি ডিম উৎপাদনের সাথে জড়িত খামারিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জনাব মিনহাজুল ইসলাম। তিনি তাঁর আলোচনায় ডিমকে সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস হিসেবে উল্লেখ করে এর স্বাস্থ্যগত দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, “ডিম কম খরচে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলসের চাহিদা মেটাতে পারে, যা দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর পুষ্টির মান উন্নয়নে সহায়ক।
ডিমের উৎপাদন বাড়ানো গেলে যেমন পুষ্টি ঘাটতি মিটবে, তেমনই বেকারত্ব দূরীকরণেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার, ডাঃ মোঃ সাহাবুদ্দিন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বিশ্ব ডিম দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি এবং চুয়াডাঙ্গায় পোল্ট্রি শিল্পের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।
ডাঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, “ডিম হচ্ছে উচ্চমানের প্রোটিনের একটি আদর্শ উৎস। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধির হার বেশ সন্তোষজনক। তবে, ডিম নিয়ে জনমনে যে ভুল ধারণা বা বিভ্রান্তি রয়েছে, তা দূর করতে আমাদের আরও সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
ডিমের পুষ্টিগত সুবিধাগুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের প্রধান কাজ।”
তিনি আরও জানান, দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্য হলো ডিমের খাদ্যমূল্য, পুষ্টিগত সুবিধা এবং স্বাস্থ্যের ওপর এর ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো।
আলোচনা সভায় উপস্থিত বক্তারা ডিমের বহুমুখী ব্যবহার ও সুস্থ জীবনধারায় এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দও ডিমের উৎপাদন, বিপণন এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এর গুরুত্ব নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আলোচনার শেষে, ডিমকে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
ডিম দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে পুষ্টি বার্তা সম্বলিত পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারে।