চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশের বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার সাক্ষাৎকার, খতিয়ান বিশ্লেষণ ও প্যারেড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

 

মোঃ নাঈম উদ্দীন
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি
দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা।

বাংলাদেশ পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণের ২০২৫ সালের বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ পর্ব, অর্থাৎ চাকরির খতিয়ান বিশ্লেষণ, ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং প্যারেড পরীক্ষা চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইন্স প্যারেড গ্রাউন্ডে অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ, রবিবার, সকাল ০৯:০০ ঘটিকা থেকে এই পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এই বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ সদস্যগণ তাঁদের পেশাগত জীবনে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পান।

এবারের পরীক্ষায় মূলত দুটি ক্যাটাগরিতে পদোন্নতির জন্য আবেদনকারী পরীক্ষার্থীগণ অংশগ্রহণ করেন:

১. কনস্টেবল/নায়েক থেকে এএসআই (নিরস্ত্র) পদে পদোন্নতি।

২. এএসআই (নিরস্ত্র) হতে এসআই (নিরস্ত্র) পদে পদোন্নতি।

পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া:
বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার এই ধাপে পরীক্ষার্থীদের দক্ষতা, পেশাগত জ্ঞান, চাকরির রেকর্ড এবং শারীরিক সক্ষমতা মূল্যায়ন করা হয়। পরীক্ষা বোর্ডের সদস্যগণ পরীক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত চাকরির খতিয়ান বিশ্লেষণ করেন।

এর মাধ্যমে তাঁদের বিগত দিনের কর্মদক্ষতা, শৃঙ্খলা, প্রাপ্ত পুরস্কার ও শাস্তির রেকর্ড পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করা হয়।

এরপর প্রতিটি পরীক্ষার্থীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। সাক্ষাৎকারে তাঁদের আইনগত জ্ঞান, বর্তমান সমাজ ও দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা, পেশাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষমতা এবং পুলিশি সেবার মানোন্নয়নে তাঁদের ভাবনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়।

এটি তাঁদের নেতৃত্বদানের সক্ষমতা ও মানসিক দৃঢ়তা যাচাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

সবশেষে, পুলিশ সদস্যদের শারীরিক ফিটনেস, সামরিক শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্ব যাচাইয়ের জন্য প্যারেড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্যারেড গ্রাউন্ডে তাঁদের মার্চিং, স্যালুটিং এবং ড্রিল সম্পর্কিত কমান্ড ও পারদর্শিতা মূল্যায়ন করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় অনুষ্ঠিত এই বিভাগীয় পদোন্নতি প্যারেড পরীক্ষায় মোট ১০৬ জন পুলিশ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে:

কনস্টেবল/নায়েক থেকে এএসআই (নিরস্ত্র) পদে পদোন্নতির জন্য পরীক্ষার্থী ছিলেন ৮১ জন।

এএসআই (নিরস্ত্র) হতে এসআই (নিরস্ত্র) পদে পদোন্নতির জন্য পরীক্ষার্থী ছিলেন ২৫ জন।
সকল পরীক্ষার্থী উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁদের পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শনে সচেষ্ট থাকেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় অনুষ্ঠিত এই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিচালনা ও মূল্যায়নের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের পরীক্ষা বোর্ড দায়িত্ব পালন করে।

এই বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা। তাঁর সুনিপুণ নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় সম্পূর্ণ কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়।

জনাব ফয়সাল মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), কুষ্টিয়া।
জনাব মোঃ মিনহাজ-উল-ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), চুয়াডাঙ্গা।

খন্দকার রুহুল আমিন, আরআই, পুলিশ লাইন্স, চুয়াডাঙ্গা।
বোর্ডের সদস্যগণ অত্যন্ত নিরপেক্ষতা, পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতার সাথে প্রতিটি পরীক্ষার্থীর মূল্যায়ন সম্পন্ন করেন।

পুলিশ সুপার ও বোর্ডের সভাপতি জনাব খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা, তাঁর বক্তব্যে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান এবং তাঁদের পেশাগত জীবনের সফলতা কামনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই পরীক্ষা প্রক্রিয়া পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও গুণগত মান বজায় রাখতে এবং যোগ্য নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে সহায়ক হবে।

পরীক্ষার ফলাফল দ্রুততম সময়ে প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। যোগ্য ও মেধাবী পুলিশ সদস্যরা এই পদোন্নতির মাধ্যমে আগামী দিনে বাংলাদেশ পুলিশের সেবাকে আরও গতিশীল করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুনঃ