চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি: ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে লুট, একজনকে আটক করলো পুলিশ

 

মোঃ নাঈম উদ্দীন
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি
দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের বোয়ালমারি ইটভাটার নিকটবর্তী এলাকায় গাছ ফেলে দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে থামিয়ে নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন লুটের ঘটনা ঘটেছে। চার সদস্যের সশস্ত্র ডাকাতদল এই ঘটনা ঘটায়।

তবে ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ একজনকে আটক করতে সক্ষম হয় এবং লুন্ঠিত অর্থের একাংশ উদ্ধার করে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর তথ্যমতে, ডাকাতি সংঘটিত হয় অত্যন্ত সুপরিকল্পিত উপায়ে। নাগদাহ ইউনিয়নের জোড়গাছা গ্রামের বাসিন্দা বাদশাহ ফয়সাল, যিনি মিঠাই বাড়ির কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন, তিনি জানান—ভোরের দিকে সড়কে একটি ট্রাক হেডলাইট জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।

এই উজ্জ্বল হেডলাইটের কারণে সামনে রাস্তায় ফেলে রাখা গাছগুলো মোটরসাইকেল চালক দেখতে পাননি। ভুক্তভোগী বাদশাহ ফয়সাল বলেন, “প্রতিদিনের মতো ভোর ৫টার দিকে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলাম। বোয়ালমারী ইটভাটার কাছে পৌঁছে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের হেডলাইটের কারণে সামনে রাখা গাছ দেখতে না পেয়ে ব্রেক করতেই ডাকাতদের সামনে গিয়ে পড়ি।

দেখি এক মোটরসাইকেলচালককে তারা বেধড়ক মারছে।” তিনি আরও জানান, ডাকাতদলের দুজনের হাতে ধারালো অস্ত্র এবং দুজনের হাতে লাঠি ছিল।

অপর মোটরসাইকেলচালক টাকা বা মোবাইল দিতে না চাইলে তাকে মারধর করে আহত করা হয়। বাদশাহ ফয়সালের কাছ থেকে সামান্য টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, ৪ সশস্ত্র ডাকাত পথচারীদের কাছ থেকে নগদ ২১ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন সহ মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেয়।
ডাকাতির শিকার হওয়ার পর বাদশাহ ফয়সাল ৯৯৯–এ কল করলে পুলিশ ২০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে ডাকাতদল ততক্ষণে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, “দুজনের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল নেওয়ার ঘটনা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের দ্রুত উপস্থিতির কারণে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

এই খবর জানাজানি হওয়ার পর ওসি খালেদুর রহমান সহ অন্য কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তদন্তে নামেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের হাজরাহাটি এলাকা থেকে এনামুলের ছেলে রকিবুল নামের এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশ।

আটককৃত রকিবুলের কাছ থেকে ছিনতাই করা অর্থের সাড়ে ১৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রকিবুল স্বীকার করেছে যে সে সহ চারজন রাস্তায় গাছ ফেলে এই লুটপাট চালিয়েছে।

চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, রকিবুল জানিয়েছে—এর আগেও তারা একই ধরনের কাজ একাধিকবার ওই একই জায়গায় করেছে!
ওসি খালেদুর রহমান

জানিয়েছেন, রকিবুলকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং বাকি তিন সহযোগীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত আছে।

এই ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা রাতের বেলা সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।

শেয়ার করুনঃ